জাহিদ খান,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার বামন ডাঙ্গা নাসের মামুদ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ঝাড়ুদার শ্রী কমল চন্দ্র দাস(৪৭) প্রধান শিক্ষকের রোষানলে পড়ে আকস্মিকভাবে চাকরি হারিয়ে পাচ বছর ধরে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, কমল চন্দ্র দাস দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বিদ্যালয়টির পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে আসছিলেন। ২০১৯ সালে হঠাৎ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোছাঃ সুলতানা বানু ও কমল চন্দ্রের মধ্যে এক সামান্য বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে প্রধান শিক্ষক সম্পূর্ণ অনিয়ম তান্ত্রিক ভাবে কমল কে সাময়িক বরখাস্ত করেন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই।
তারপর কমল চন্দ্র বিভিন্ন ভাবে অনুনয় বিনয় করেও কোনভাবেই প্রধান শিক্ষক সুলতানা বানুর মন গলাতে পারে নাই।উল্লেখ্য বিদ্যালয় টির প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি স্বামী স্ত্রী হওয়ায় তারা দিনকে রাত রাতকে দিন বানাতে পরোয়া করেনি।উল্লেখ্য - আঃ খালেক ব্যাপারী ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগ সরকারের বামন ডাঙ্গা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক।
কমল চন্দ্র কোনো ভাবেই বিষয় টি নিস্পত্তি করতে না পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন করেন।কিন্তু সভাপতি আঃ খালেক আওয়ামীলীগ নেতা হওয়ায় এম পি, উপজেলা চেয়ারম্যান স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় বিষয় টি ধামা চাপা দিয়ে দেয়।উপরন্তু কমল কে বিভিন্ন ভাবে চাপ দিতে থাকে আপোষে চাকুরী ইস্তফা দিতে।এর কারণ, কমল ইস্তফা দিলেই নতুন একজন কে নিয়োগ দিতে পারে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ সুলতানা বানু বলেন, “কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।সঠিক নিয়ম মেনে বরখাস্ত করা হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে বিষয়টি নিয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি।
চাকরি হারিয়ে হতাশ কমল চন্দ্র দাস বর্তমানে আর্থিক সংকটে ভুগছেন। তিনি জানান, “স্কুলটিই ছিল আমার একমাত্র রোজগারের জায়গা। বিনা কারণে আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এখন আমার আর কোনো উপার্জনের পথ নেই।”
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: কামরুল ইসলাম সাহেব কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান কমল চন্দ্রের বরখাস্ত নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে হয়নি।তার বেতন ভাতা এখনো প্রতিষ্ঠান এ আসছে।তিনিও বিষয় টির মানবিক সমাধান কামনা করেন।
এলাকার সমাজকর্মী ও স্থানীয় নেতারা কামালের এই অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি আরও তদন্তের জন্য শিক্ষা বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।
তানহা আজমী