সাদ আসরাফি, বুটেক্স:
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে নতুন এক পদ্ধতি চালু করেছে। নতুন এই পদ্ধতিতে
পরীক্ষার্থীর রোল নম্বর বা আইডি মূল্যায়নকারী শিক্ষকের কাছে গোপন থাকবে। খাতা মূল্যায়নের সময় শিক্ষকেরা পরীক্ষার্থীদের পরিচয় জানতে পারবেন না, যা মূল্যায়নের
ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশের অন্যান্য অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের সময়ে পরীক্ষার্থীর পরিচয় গোপন রাখার ব্যবস্থা থাকলেও বুটেক্সে তা অনুপস্থিত ছিলো। ফলে শিক্ষার্থীদের
পক্ষ থেকে অভিযোগ ছিল যে, পরীক্ষার খাতায় উল্লেখ করা আইডি ও বিভাগীয় তথ্যের মাধ্যমে শিক্ষকেরা পরীক্ষার্থীদের সহজেই শনাক্ত করতে পারতেন। এতে ব্যক্তিগত
আক্রোশ বা পক্ষপাতমূলক আচরণের সম্ভাবনা ছিলো। অতীতে কিছুক্ষেত্রে এমন অভিযোগ আদালত পর্যন্ত যাওয়ার দৃষ্টান্তও রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় ধরে নামহীন কোড পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে, বুটেক্স প্রশাসন কোড পদ্ধতি চালু না করলেও চালু করেছে নতুন টেপ পদ্ধতি ।
নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মারজানী তুবন নাহার বলেন, এ পদ্ধতিতে পরীক্ষার খাতার উপরের ডান পাশে একটি বিশেষ টেপ ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষা শেষে রোল নম্বরের অংশটি টেপ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হবে। মূল্যায়নকারী শিক্ষক সেই টেপ খুলতে পারবেন না। মূল্যায়ন শেষে আরেকজন শিক্ষক টেপ খুলে আইডি অনুযায়ী নম্বর লিপিবদ্ধ করবেন। তিনি বলেন, এ পদ্ধতিতে কাজের পরিমাণ কিছুটা বাড়লেও শিক্ষার্থীদের পক্ষপাতমূলক মূল্যায়নের অভিযোগ অনেকাংশে দূর হবে।
ডাইজ অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন জানান, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে ন্যায্যতা নিশ্চিত
করা। নতুন এই পদ্ধতি পরীক্ষার স্বচ্ছতা বাড়াবে এবং পক্ষপাতের সুযোগ কমাবে। ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান ড. মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় এ
ধরনের পদ্ধতি অনেক আগে থেকেই ব্যবহৃত হচ্ছে। সেমিস্টার পরীক্ষায় এটি চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে।
৪৬তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, নতুন এই পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আরও স্বস্তি অনুভব করবেন। তিনি বলেন, পূর্বে কিছু শিক্ষার্থীর প্রতি
পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ উঠত। তবে এই পদ্ধতি সেই সমস্যা দূর করবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কোড পদ্ধতির ব্যবহার করা হলে পুরো প্রক্রিয়া আরো ফলপ্রদ হতে পারতো। তবে, আশা করি এই টেপ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের আশা পূরনে সক্ষম হবে।
দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে বুটেক্স প্রশাসনের এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। এটি খাতা মূল্যায়নে ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে
আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমআই