মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

সংক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার ওপর হামলার বিচারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

সোমবার, জানুয়ারী ২০, ২০২৫
সংক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার ওপর হামলার বিচারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

জাহিদুল ইসলাম, রাবি প্রতিনিধি :

পাঠ্যবইয়ে আদিবাসী শব্দসংবলিত গ্রাফিতির ছবি পুনঃস্থান, আদিবাসী শিক্ষার্থী ও ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র জনতার’ ওপর হামলার বিচারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারী) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

কর্মসূচির শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডসহ বিভিন্ন একাডেমিক ভবন সংলগ্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে বিক্ষোভটি শেষ হয়। পরে সেখানে ঘণ্টাব্যাপী একটি সমাবেশ হয়।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘পাহাড় ও সমতলে লড়াই হবে সমানতালে’, ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশে বৈষম্য কেন’, ‘মব সৃষ্টি করে হামলা চলবে না’, ‘আদিবাসীদের ওপর সহিংসতা বন্ধ কর’, ‘সকল জাতিস্বত্বার সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত কর’, ‘এক জাতির দেশ নয়, বহুজাতির বাংলাদেশ চাই’ প্রভৃতি প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন।

সমাবেশে অধ্যাপক সৈয়দ মুহাম্মদ আলী রেজা বলেন, ‘আদিবাসীদের সঙ্গে উপজাতি, সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ যে সমস্ত কথা উঠে আসে প্রতিটি শব্দই রাজনৈতিক। এই রাজনৈতিক শব্দগুলোর সঙ্গে  অর্থনীতি যুক্ত থাকে। ফলে আদিবাসী হিসেবে কাকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হিসেবে কাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে সেটি কিন্তু রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এই ভূখন্ডে বুদ্ধের শাসন থেকে শুরু হয়ে হিন্দু শাসন, সেনের শাসন, পরে মুসলিমের শাসনের ধারাবাহিকতা আছে। এটাকে অস্বীকার করে যদি আপনি বাঙালি চিন্তা করেন তাহলে আপনি বাঙালি নয়। বাঙালি পৃথিবীর সবচেয়ে শংকর জাতি। আদিবাসী চিন্তা করতে গেলে তাদের অধিকারের কথা আসে। এই অধিকারের কথাটা আমরা অস্বীকার করতে চাই। দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আমি বলতে চাই, যে ধরনের প্রচেষ্টা বাংলাদেশকে বিভক্ত করতে চায় সেই প্রচেষ্টার বিপরীতে আমি জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।’

গোলাম সারওয়ার বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ তৈরি করেছি, সেটাকে নস্যাৎ করার জন্য কিছু মানুষ উঠে পড়ে লেগেছে। আদিবাসী ভাই-বোনেরা যখন তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করছিল, তখন স্টুডেন্ট ফোর সভরেন্টির সদস্যরা লাঠিতে জাতীয় পতাকা বেধে তাদের ওপর আক্রমণ করেছিল। সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে তাঁদের আহত ও রক্তাক্ত কর হয়েছে। এভাবে জাতীয় পতাকারও অবমাননা করা হয়েছে। এই হামলা ও জাতীয় পতাকার যারা অবমাননা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে সবার বাংলাদেশ নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি বিজয় চাকমা বলেন, ‘খালি চোখে স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টিকে দেখলে মনে হবে উগ্রবাদী ও উগ্রপন্থীদের সংগঠন। কিন্তু এর পেছনে প্রেক্ষাপট রয়েছে। এটি পাহাড়ের আশি-নব্বই দশকের স্যাটেলার কর্তৃক মদদপুষ্ট একটি সংগঠন। ফলে যখনই আদিবাসী জনগোষ্ঠী আত্মনিয়ন্ত্রণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি দাওয়া তুলে, তখনই তাদের মধ্যে বিষফোঁড়া উন্মোচিত হয়। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমতলের আদিবাসীদের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা প্রদেশ ও বিদ্রোহ করার অভিযোগ তুলে। এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা যারা পোষণ করে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করে। ঢাকায় যে হামলার দায় এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। রাষ্ট্রের চরিত্র ফ্যাসিস্ট সরকারের মতোই আছে। যার ফলে পুলিশ বাহিনী প্রতিবাদী সমাবেশে হামলা চালিয়েছে।’

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মুহাম্মদ আলী রেজা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ রাজা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার ও ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. গোলাম সারওয়ার। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল, ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেনসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী ও আদিবাসী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আলিফ শাহরিয়ার

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল