সময় জার্নাল ডেস্ক:
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। ফলে বন্ধ রয়েছে সারাদেশের ট্রেন চলাচল। এতে কমলাপুরসহ সারাদেশের ট্রেন স্টেশনগুলো ভোগান্তিতে পড়েছেন শত শত যাত্রী। স্টেশনে যাত্রী বিক্ষোভের পাশাপাশি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও রেলওয়ের পক্ষ থেকে টিকিটকাটা যাত্রীদের জন্য বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। তবে এটি ট্রেনযাত্রার মতো স্বস্তিদায়ক নয় বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা।
ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে অনেকেই ভোগান্তি সয়ে সড়কপথে গন্তব্যে ছুটছেন। এছাড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্য পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। এতে করে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি অলস সময় পার করছেন শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কমলাপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও রংপুরে রেলস্টেশনে যাত্রীদের এমন ভোগান্তি দেখা গেছে।
স্টেশনগুলোতে অসংখ্য যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তারা জানান, তারা কেউই ট্রেন চলাচল বন্ধের বিষয়ে জানতেন না। শীতের মধ্যে পরিবার নিয়ে কাউন্টারে এসে পড়েছেন ভোগান্তিতে।
চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে নির্ঘুম রাত কাটালেন যাত্রীরা
সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ছেড়ে যায়নি কোনো ট্রেন। এর মধ্যে যে সব যাত্রী কর্মবিরতির খবর না জেনে স্টেশনে এসেছেন তারা পড়েন দুর্ভোগে। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন রেল স্টেশনেই। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এবং পুরাতন স্টেশন থাকা যাত্রীরা এই দুর্ভোগের কথা জানিয়েছেন।
রেলওয়ের তথ্যমতে, মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসসহ একাধিক আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেন নির্ধারিত শিডিউল ছিলো। কিন্তু রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির ফলে চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়নি কোনো ট্রেন।
চট্টগ্রাম নতুন রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেনের কোনো যাত্রীকে খুব একটা দেখা যায়নি। হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী এসেছেন, যারা এই কর্মবিরতির খবর আগে থেকে জানতেন না।
এদিকে রেলের সেন্ট্রাল সাউন্ড সিস্টেমে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রী দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশের ঘোষণা করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি টিকিটের টাকা ফেরত নেওয়ার আহ্বানও জানাচ্ছেন স্টেশনের দায়িত্বশীলরা।
খুলনা
হঠাৎ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় খুলনার যাত্রীরা পড়েছেন দুর্ভোগে। নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে না পেরে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে।
সকাল সাড়ে ৯টায় খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য যাত্রী টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় করেছেন। কেউ কেউ ট্রেন কখন চালু হবে তা জানতে চাইছেন। আবার অনেকে ট্রেন না চলায় টিকিটের টাকা ফেরত নিচ্ছেন।
যাত্রীরা জানান, সকালে রেলস্টেশনে এসে তারা জানতে পারেন যে ট্রেন চলবে না। টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নির্ধারিত গন্তব্যে তারা যেতে পারছেন না। এর ফলে তাদেরকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। এখন বাসে তাদেরকে নির্ধারিত গন্তব্যে যেতে হবে।
সিলেট
রানিং স্টাফদের আন্দোলনের কারণে সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও আটকা পড়েছেন ট্রেন যাত্রীরা। রাত ১২টার পর সিলেট থেকে কোনো ট্রেন না থাকলেও ভোরবেলা কালনি ট্রেন থাকায় প্ল্যাটফর্মে এসে বিপাকে পড়েছেন ওই ট্রেনের যাত্রীরা। রেলওয়ে নিয়ম অনুযায়ী অনলাইনে করা টিকিট অনলাইনে রিফান্ড হবে এবং কাউন্টার থেকে করা টিকিট রিফান্ড করা হবে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টার সজীব বলেন, আজ সিলেট থেকে উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ ছিলো।
সিরাজগঞ্জ
সকাল ১০ টার দিকে সিরাজগঞ্জ বাজার রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ বাজার রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রেলের স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে ট্রেন না ছাড়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন যাত্রীরা। আবার কেউ কেউ বাসযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
রেলস্টেশনে থাকা যাত্রীদের অভিযোগ, আজ ট্রেন বন্ধ থাকবে, তবুও অনলাইনে টিকিট বিক্রি করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। যদি ট্রেন বন্ধ থাকে তাহলে কেন টিকেট বিক্রি করা হলো। হঠাৎ করে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ায় অধিকাংশ যাত্রী জানতেন না সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় অনেক যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন।
এমআই