নিজস্ব প্রতিনিধি:
মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতিতে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৫। এবারের বইমেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান : নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ।’ এবারের বইমেলা পরিবেশবান্ধব করতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বইমেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন অমর একুশে বইমেলা ডিরেক্টরি কমিটির সভাপতি ও একাডেমির মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আজম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব ড. সেলিম রেজা ও অমর একুশে বইমেলা কমিটির সচিব ড. সরকার আমিন।
এবারের বইমেলায় মোট প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ৭০৮টি, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টি, মোট ইউনিট ১০৮৪টি (গত বছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৪২টি এবং ইউনিট ছিল ৯৪৬টি)। এবার মোট প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৩৭টি, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে একটি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি (গত বছর প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৩৭টি)।
লিটল ম্যাগাজিন চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায় হবে। সেখানে প্রায় ১৩০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শিশুচত্বরে মোট প্রতিষ্ঠান ৭৪টি এবং ইউনিট ১২০টি (গত বছর প্রতিষ্ঠান ছিল ৬৮টি এবং ইউনিট ১০৯টি)।
এবার বইমেলার বিন্যাস গতবারের মতো অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে। তবে কিছু আঙ্গিকগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মেলার বাহির-পথ এবার একটু সরিয়ে মন্দির-গেটের কাছাকাছি স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্লান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন অংশে মোট চারটি প্রবেশ ও বাহির-পথ থাকবে।
শিশু চত্বর মন্দির-গেটে প্রবেশের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে, যেন শিশুরা অবাধে বিচরণ করতে পারে এবং তাদের কাঙ্ক্ষিত বই সহজে সংগ্রহ করতে পারে। মেলায় এবার খাবারের স্টলগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সীমানা-ঘেঁষে বিশেষভাবে সুবিন্যস্ত করা হয়েছে।
মেলায় অন্যান্য বছরের মতো এবারো নামাজের স্থানসহ অন্যান্য পরিষেবা অব্যাহত থাকবে, ধুলোবালি প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং সকলের সুবিধার্থে এবারই প্রথম মেলার ইতিহাসে সব মিলিয়ে ৩০টি ওয়াশরুমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে প্রেস কনফারেন্সে আয়োজকেরা জানান।
বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। এবারের বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশ করছে নতুন ৪৩টি ও পুনর্মুদ্রিত ৪১টি বই। বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন এবং শিশুকিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য একটি স্টল থাকবে।
প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে।
৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাড়া প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে শিশুকিশোর চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকছে।
সময় জার্নাল/এলআর