জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষ্ণানন্দ বকসী সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে পাঁচ বাংলাদেশি কৃষককে মারধর করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে ৯৩০ নম্বর আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের ৮ নম্বর সাব-পিলারের পাশে, প্রায় ৫০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে, এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত কৃষকরা জানান, দুপুরে ১০-১২ জন কৃষক সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে তাদের ভূট্টা, মরিচ ও আলুর ক্ষেতে কাজ করছিলেন। এ সময় ভারতের নারায়ণগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের ৮-১০ জন সদস্য হরিদাস খামার গ্রামের কাটাতারের ৩ নম্বর গেট খুলে শূন্যরেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। কৃষকরা তাদের বাধা দিলে বিএসএফ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে।
প্রাণভয়ে কৃষকরা দৌড়ে গ্রামে প্রবেশ করলে বিএসএফ সদস্যরাও তাদের পিছু নিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়ে। পরে গ্রামবাসীরা সংঘবদ্ধ হয়ে বিএসএফকে ধাওয়া দিলে তারা দ্রুত কাটাতারের ভেতরে ফিরে যায়।
বিএসএফের হামলায় আহত পাঁচ কৃষক হলেন—সামছুল হক (৫৫), পিতা: মৃত ইসরাইল, জাবেদ আলী (৬০), পিতা: মৃত খোকা মাহমুদ,কাশেম আলী (৪৮), পিতা: মোন্নাফ হোসেন,রিপন মিয়া (৩৫), পিতা: মৃত মুকুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম (৩৮), পিতা: কাশেম আলী
সংবাদ পেয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন গোরকমন্ডল বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে এবং সীমান্ত থেকে সরিয়ে দেয়।
এদিকে, সীমান্তের ওপারে দুটি পিকআপভর্তি ৫০-৬০ জন অতিরিক্ত বিএসএফ সদস্য মোতায়েন করা হয়, যা এলাকায় আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাকিল আলম জানিয়েছেন, ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবাদ জানানো হবে।
এই ঘটনার পর দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। স্থানীয়দের নিরাপত্তার স্বার্থে বিজিবি নজরদারি আরও জোরদার করেছে।
এমআই