নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে সম্প্রতি গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)।
মুক্ত সাংবাদিকতা এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটি তাদের রিপোর্টে বলেছে, ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে সাংবাদিকদের উপর লাঠি এবং হাতুড়ি দিয়ে আঘাতসহ গুরুতর হামলা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং নিউজরুমে আক্রমণ চালানো হচ্ছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আরএসএফ-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ অফিসার এবং রাজনৈতিক কর্মীরা মূলত এই হামলাগুলো চালাচ্ছে। তারা প্রতিটি অপরাধীর বিচার এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষর প্রতি আহ্বান জানায়।
আরএসএফ-এর দক্ষিণ এশিয়া ডেস্ক প্রধান সিলিয়া মেরসিয়ের বলেন, ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর গণমাধ্যমের পরিবেশে উন্নতির আশা সৃষ্টি হলেও, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা অনিশ্চিতই রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, “গত কয়েক দিনে সাংবাদিকদের উপর একের পর এক আক্রমণ মিডিয়ার বিরুদ্ধে সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। রিপোর্টিং করার সময় আক্রমণ করা হচ্ছে, লেখার জন্য শারীরিকভাবে প্রতিশোধ নেয়া হচ্ছে, এবং বিক্ষোভকারীরা নিউজরুমে হামলা করছে।”
বেশ কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রকাশিত প্রতিবেদন মুছে ফেলার দাবিতে হামলা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে হামলার পাশাপাশি সাংবাদিকদের কাজে পুলিশের বাধা প্রদান ও আক্রমণ হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র আনুমানিক ২০ জন সমর্থক সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এটিএন নিউজ-এর জাভেদ আক্তারকে আক্রমণ করে। এনটিভির হাসান জাবেদ এবং দীপ্ত টিভির আজিজুল ইসলাম পান্নু আক্তারকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসলে তাদেরও আক্রমণ করা হয়। সাংবাদিকরা ওই সময়ে একটি মামলায় রায় কাভার করতে গিয়েছিলেন।
‘একদিন পরেই, ইন্ডিপেন্ডেন্ট২৪ টিভি’র মোহাম্মাদ ওমোর ফারুক, একাত্তর টিভি’র সাইয়েদ মাইনুল আহাসান মারুফ এবং অন্যান্য সাংবাদিকদের উপর বিক্ষোভকারীরা হামলা করে। ঐ সময় তারা ঢাকা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ও স্মৃতি জাদুঘর ভাঙ্গার ঘটনা কাভার করছিল। পুলিশ কোন হস্তক্ষেপ করেনি’ উল্লেখ করা হয় আরএসএফ’র প্রতিবেদনে।
সহিংসতার এসব ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে মিডিয়া পেশাজীবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওাতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছে আরএসএফ।
সময় জার্নাল/এলআর