শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বাঙালিকে মাথানত না করতে শেখানো একুশ আজ

শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২৫
বাঙালিকে মাথানত না করতে শেখানো একুশ আজ

সময় জার্নাল ডেস্ক:

মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এইদিনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মমভাবে গুলিবর্ষণ করে তৎকালীন পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর পুলিশ। এতে সালাম, বরকত, রফিক, শফিউর, জব্বারের বুকের রক্তে রঞ্জিত হয় ঢাকার রাজপথ। তাই এ দিনটিকে শহীদ দিবস বলা হয়ে থাকে।

অন্যদিকে, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে সারাবিশ্বে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। তাই দিনটি বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষাভাষিদের জন্য গৌরবের।

একুশে ফেব্রুয়ারি মানেই রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দেওয়ার দিন। শোষকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মাতৃভাষা রক্ষায় বুলেটের সামনে বুক পেতে দেওয়া বিশ্বের বুকে এক নজিরবিহীন ঘটনা।

একুশে ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর দুঃশাসন ও শোষণের শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতিসত্তা বিনির্মাণের প্রথম সোপান। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে না হতেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আমাদের মুখের ভাষা ‘বাংলা’ কেড়ে নিতে চায়। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা দিলেন ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।’

কিন্তু বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২ সালের এদিনে ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সেসময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ রাঙানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।

বাঙালি জাতির এ দিবসটি একদিকে শোক ও বেদনার, অন্যদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত গৌরবময় দিন। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা (ইউনেসকো) ১৯৯৯ সালে মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও দিবসটি পালিত হচ্ছে।

যে কোনো জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার- মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদরা জাতিকে সেই মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছে।

১৯৫২ সালের এদিনে শহীদদের শাণিত ধারায় যে আলোকিত পথের উন্মোচন ঘটেছিল, সেই পথ ধরে এসেছিল স্বাধীনতা। আজ আত্মমর্যাদায় সমুন্নত এক মহান জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অন্তহীন প্রেরণার নাম একুশে ফেব্রুয়ারি।

এখনো জাতির যে কোনো ক্রান্তিকালে একুশ প্রেরণা জোগায়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই ভাষা আন্দোলন জাতির বীরত্বপূর্ণ ঐতিহ্যের পরিচয় তুলে ধরে। বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি অধ্যায়েই জড়িয়ে রয়েছে একুশের প্রেরণা। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-দল-মত নির্বিশেষে উদযাপন করার মতো এমন কালজয়ী দিন এ দেশে দ্বিতীয়টি নেই। তাই অমর একুশে উদযাপনে বাঙালির আবেগ হয়ে ওঠে বাঁধনহারা।


প্রিয় মাতৃভাষার মর্যাদা-অধিকার রক্ষা, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত অগণিত শহীদের রক্তে রঞ্জিত দিবসটি সমগ্র বাঙালি জাতি বরাবরের মতো এবারও শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ ও পালন করবে।

এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল