স্টাফ রিপোর্টারঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফ্যাসিস্টচক্রের থাবা থেকে জাকের ডেইরি ফার্মের জমি রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। সোমবার সকাল ১০ টায় মোহাম্মদপুর বেড়ীবাঁধ এলাকায় এ মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তা ও কর্মীরা।
মানববন্ধনে তারা বলেন, অদম্য পরিশ্রম আর দৃঢ় মনোবল নিয়ে রাজধানী মোহাম্মদপুর বেড়িবাধে গড়ে তোলা হয় জাকের ডেইরী গরু খামার। দেড়যুগ ধরে অক্লান্ত শ্রমে গড়ে তোলা ফার্মটি দেশে পশুপালনে স্বাবলম্বী হওয়া ও কর্মসংস্থান তৈরির এক দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে। এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফার্মটিতে প্রায় ৮শতাধিক দুগ্ধজাত গাভী আছে। জাকের ডেইরী ফার্মের আনোয়ার হোসেন হয়ে উঠেন একজন সফল উদ্যোক্তা এবং লাভজনক ডেইরী র্ফাম ও গরুর খামারের মালিক। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পতনের কয়েক মাস আগে ফ্যাসিস্টচক্রের শেখ রেহানা, সাবেক মেয়র আতিক, তাদের রংমহলের শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ এক ঘণ্টায় শেষ করে দেন জাকের ডেইরি ফার্ম। বড় ফ্যাসিস্টরা পালালেও তাদের সহযোগী মোতাকাব্বির এখনো সক্রিয়। জাকের ডেইরি ফার্মের জায়গায় বাজার বাসানোর পাঁয়তারায় লিপ্ত তারা। জায়গাটি ফিরে পেতে অসহায় উদ্যোক্তা ও কর্মীদের কান্না-আহাজারি। সুবিচার পেতে প্রধান উপদেষ্টাসহ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
জানা যায়, ১৯৯৪ সাল থেকে প্রাকৃতিক দুধ, মিষ্টি, দই, ঘি এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত মানসম্মত পুষ্টির খাবার উৎপাদন করে দেশজুড়ে সুনাম কুড়িয়েছেন জাকের ডেইরী ফার্ম। যা দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশী সময় ধরে দেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত। ফ্যাসিস্টচক্রের শেখ রেহেনা, মেযর আতিক, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নিবার্হী কর্মকতা মোতাকাবিবর আহমেদসহ চারজনে মিলে জাকের ডেইরী ফামটিকে উচ্ছেদের নামে গুড়িয়ে দেয়। ফার্মটির মালিক আনোয়ার হোসেন উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করলে উচ্ছেদ না করতে ৬ মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা উত্তর সিটি আঞ্চলিক নিবার্হী কর্মকতা মোতাকাব্বির আহমেদ কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়েই ভাংচুর শুরু করে। খামারটি ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে অভুক্ত গরু নিয়ে ভুক্তভোগী কৃষক ও কর্মচারীরা ফ্যাসিবাদ হাসিনার পতনের কয়েকমাস আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন। খামারে ৮ শতাধিক গাভি, ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের পশুসহ প্রায় ১৫০ জন শ্রমিক রয়েছে।
কারখানার শ্রমিক মিলন মিয়া কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের একটাই দাবি জাকের ডেইরী ফার্মের জায়গাটি ফিরিয়ে দেন। আমরা দু-বেলা দুমুঠো ভাত খেয়ে বাঁচতে পাররি। ফ্যাসিস হাসিনা সরকারের সবাই পালালেও পালাইনি আওয়ামী লীগের দোসর মোতাকাব্বির আহম্মেদ। সে এখন বাজার বাসানোর পায়তারা জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । আশেপাশে শতশত বিঘা সরকারি জায়গা রয়েছে সেই দিকে দৃস্টি না দিয়ে জাকের ডেইরী ফার্মেই বাজার বসানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তিনি। আমরা ফ্যাসিস্টচক্রের আঞ্চলিক নিবার্হী কর্মকতা মোতাকাব্বিরের দৃস্টান্তর মূলক বিচার চাই। কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতিসহ জাকের ডেইরী ফার্মের জায়গা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সুদৃষ্টি কামনা করি।
জাকের ডেইরী ফার্মের মালেক আনোয়ার হোসেন বলেন, স্বৈরাচার শেখ রেহেনার বান্ধরী সুরের ধারা রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সীমানা ঘেষা আমার ফামর্টি। তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে। এক পর্যায় শেখ রেহেনা, সাবেক মেযর আতিক ও রেজওয়ানাসহ তিনজনে মিলে এক ঘন্টায় হাজার কোটি টাকার স্বপ্ন নির্মিষে জাকের ডেইরী ফার্মটিকে শেষ করে দিলো। আমার কোন বাড়ী ছিলো না বাড়ী ছিলো জাকের ডেইরী ফার্ম। জায়গাটা আমার দলিল করা। ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন করেছি। কাগজপত্র না থাকলে ব্যাংক কিভাবে এতো টাকা ঋণ দিল। আমি পশু পালনের ওপরে অনেকগুলো সনদ অর্জন করেছি। সরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকে ওই সনদগুলো দেওয়া হয়েছে। আমার কি অপরাদ ও দোষ ছিলো। সরকারকে ভ্যাট, ট্যাক্্র জায়গার খাজনা, হোল্ডিং প্রতি মাসে দিয়ে আসছি। এখানে আমি ৩০ বছর ধরে বসবাস করছি এবং একটি প্রতিষ্ঠান করছি জাকের ডেইরী র্ফাম। আমিতো একজন কৃষক গড়ার কারিগর ছিলাম। কৃষকের পূর্ন দুধ কিভাবে দেশে উন্নতমান হবে এই নিয়ে কাজ করছি। আমিতো স্বৈরাচার ছিলাম না। কেন আমার প্রতি এতো অত্যাচার করে ধুলিসাতে মিছিয়ে দিলো। আমার জায়গাটা ফিরিয়ে দেন। স্বৈরাচার শেখ রেহেনা, মেয়র আতিক, ভারতের র রেজওয়া চৌধুরী বন্যা ও নিবার্হী কর্মকতা মোতাকাব্বিরের দৃস্টান্ত মুলক বিচার চাই।
এমআই