এম.পলাশ শরীফ, বাগেরহাট:
বাগেরহাটের শরণখোলায় ক্ষেতের বোরো ধান কেটে নষ্ট করছে ইঁদুর। তাই কষ্টের ফসল রক্ষায় লোহার গুনায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে পেতে ছিলেন ইঁদুর নিধনের ফাঁদ। অবশেষে নিজের পাতা সেই ফাঁদেই প্রাণ হারিছেন মো. আলম শেখ (৫৫) নামের এক কৃষক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শরণখোলা থানার ওসি মো. শহিদুল্লাহ।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের ধানসাগর গ্রামে। নিহত আলম শেখ ওই গ্রামের মৃত মফিজুল শেখের ছেলে।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সুব্রত কুমার বিশ্বাস জানান, বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নিজের এক বিঘা জমিতে মাছের ঘেরে সাথী ফসল হিসেবে বোরো ধানের চাষ করেছেন আলম শেখ। মাছের ঘেরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বেড়ে যায় ইঁদুরের উৎপাত। কোনো উপায় না পেয়ে ইঁদুর মারার জন্য ধান ক্ষেতের চারপাশে লোহার গুনা টাঙিয়ে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ফাঁদ তৈরি করেন তিনি। শেষমেষ নিজের পাতা সেই ফাঁদেই মৃত্যু হয় তার।
স্ত্রীর বরাত দিয়ে গ্রাম পুলিশ সুব্রত আরো জানান, সকাল ৭টার দিকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়েই ক্ষেতের কাছে গিয়েছিলেন আলম শেখ। ক্ষেতের পাশ থেকে হাটার সময় হঠাৎ পা পিছলে বৈদ্যুতিক গুনার ওপর পড়ে ছটফট করতে থাকেন। এসময় স্ত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে উদ্ধারের আগেই মারা যান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, ইঁদুর মারা বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে কৃষকের মৃত্যুর খবর শুনেছি। বৈদ্যুতিক ফাঁদ অত্যন্ত বিপদজনক। ইঁদুর মারতে বিদ্যুতের অপব্যবহার না করার জন্য বহুবার সতর্ক করা হয়েছে কৃষকদের। তবুও কেউ কেউ করছে। এব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আরো জোরালো সতর্ক ভূমিকা পালন করা হবে।
শরণখোলা থানার ওসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, খবর পেয়ে কৃষকের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। মৃত্যু নিয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।