শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

নলছিটিতে যুবদল ও ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন

শুক্রবার, মার্চ ২১, ২০২৫
নলছিটিতে যুবদল ও ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন

মো. মোস্তা‌ফিজুর রহমান রিপন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

ঝালকাঠির নলছিটিতে যুবদল ও ছাত্রদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার পর এবার মিথ্যা নাটক সাজিয়ে মামলা ও মানববন্ধন করে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারাীরা এক সময় আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিল। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পরে তাঁরা বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) বেলা সা‌ড়ে ৩টায় ঝালকাঠির নলছিটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন উপজেলার সিদ্ধকঠি ইউনিয়ন বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক এখলাচ হোসেন মুন্নার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউনিয়ন যুবদল নেতা ফেরদৌস আহমেদ।

লিখিত অভিযোগে দাবি করা হয়, সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রনি সিকদারের সঙ্গে লেবারের কাজ করতেন হুমায়ুন সরদার ও সুমন সরদার। রনি সিকদার ওই দুজনের কাছে কাজের কিছু টাকা পায়। পাওনা টাকা চাইলে রনি সিকদারকে মারধর করে তাঁরা। হামলাকারীরা গত ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিল। বর্তমানে বিএনপির পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। রনিকে মারধর করার পরে হুমায়ুন সরদার ও সুমন সরদার উল্টো সেনাবাহিনী ও সাংবাদিকদের খবর দিয়ে একটি ভবন নির্মাণ কাজে তাদের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বলে অভিযোগ করেন। হুমায়ুন ও সুমন সেনাবাহিনী ও সাংবাদিকদের কাছে জানায়, রনি বিএনপি অফিস নির্মাণের জন্য দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। এমন মিথ্যা খবর শুনতে পেয়ে ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক এখলাচ হোসেন মুন্না ও ছাত্রদল নেতা শুভকে ঘটনাস্থলে যায়। হুমায়ুন ও সুমনের কাছে তাঁরা জানতে চান, ‘তোমরা বিএনপি অফিসের নামে মিথ্যা প্রচার করছো কেন’। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হুমায়ুন ও সুমনের নেতৃত্বে আট-দশজন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী নিয়ে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করে। তাঁরা ছাত্রদলনেতা শুভকে মারধর করে। শুভ নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। পরে সে নলছিটি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান মল্লিক উভয় পক্ষকে নিয়ে মিমাংসার বৈঠক করেন। এ সময় কোন চাঁদা দাবির প্রমাণ পায়নি সালিস বৈঠকে অংশ নেওয়া গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। রনি ও সুমন সরদারের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ প্রমানিত হয়। হাবিবুর রহমান বিষয়টি সমাধান করে দেন। উভয় পক্ষকে বিরোধে না জড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে হুমায়ুন ও সুমন সালিস মিমাংসা না মেনে রনি ও তাঁর ভাইকে স্থানীয় একটি দোকানে ডেকে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্মমভা‌বে নির্যাতন করেন। এ ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়া‌রি নলছিটি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। 

নলছিটি থানার সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) কাওছার হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে আসেন। তদন্তকালে উপস্থিত হন ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক এখলাচ হোসেন মুন্নাসহ কয়েকজন। এতে ক্ষিপ্ত হয় হামলাকারীরা। ৪ ফেব্রুয়া‌রি দুপুরে সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক এখলাচ হোসেন মুন্না, দপদপিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রাসেল মাঝি, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মোহাম্মদ সোহাগসহ ৫/৬ জনকে সুমন সরদার, হুমায়ুন সরদার, রাসেল হাওলাদার, রফিক হাওলাদার, সুলতান সরদার, আদু গাজী, ইমন হাওলাদার ও মনিরসহ কয়েকজন ব্যক্তি কুপিয়ে আহত করে। গুরুতর অবস্থায় এখলাচ হোসেন মুন্না, রাসেল মাঝি ও সোহাগকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ৪ মার্চ নলছিটি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলে নলছিটি ও ঝালকাঠির কয়েকজন বিএনপি নেতার সহযোগিতায় আসামিরা জামিনে বের হয়ে আহতদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। উল্টো আসামিরা জামিনে বের হয়ে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আহতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও কয়েকজন সাংবাদিক ডেকে এনে একটি মানববন্ধনও করেন। হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান মল্লিক, সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম, যুগ্ম সম্পাদক কামাল খান, যুগ্ম সম্পাদক রফিক মাঝি, যুবদল আহ্বায়ক এখলাচ হোসেন মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আরিফ তালুকদার, সদস্যসচিব রিয়াজ আহমেদ, কৃষক দলের সভাপতি রাশেদ খান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম তানসেন। এ সময় ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, এ ঘটনায় নলছিটি থানায় মামলা হয়েছে। আসামিরা জামিনে বের হয়ে হুমকি দেওয়ার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল