মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে অংশ নেয়া খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নে সায় মার্কিন আদালতের

শনিবার, এপ্রিল ১২, ২০২৫
ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে অংশ নেয়া খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নে সায় মার্কিন আদালতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার দায়ে গত মাসে আটক কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবে বলে রায় দিয়েছেন মার্কিন এক আদালত। 

লুইজিয়ানার লা সাল অভিবাসন আদালতের বিচারক জেমি কোম্যানস এই আদেশ দেন। যদিও এখনি খলিলকে যুক্তরাষ্ট্রকে থেকে তাড়িয়ে দিতে পারছে না, তবে বিদেশি ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

খলিলের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ নেই। কারাগার থেকে এক চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলার কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ১৯৫২ সালের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের আওতায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও—যিনি ট্রাম্পের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত—মত দেন যে, খলিলের 'আইনসঙ্গত' বক্তৃতা ও কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির জন্য হুমকি হতে পারে। সেই মতামতের ভিত্তিতেই তার বিতাড়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিচারক কোম্যানস জানান, তিনি একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বাতিলের এখতিয়ার রাখেন না। খলিলের আইনজীবীরা রুবিওকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে হাজির করার আবেদন করলেও তা নাকচ হয়।

শুনানিটি হয় লুইজিয়ানার একটি অভিবাসন বন্দিশিবিরে, যেখানে খলিল বর্তমানে আটক রয়েছেন। আদালত খলিলের পক্ষের আইনজীবীদের ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে বিতাড়নের চূড়ান্ত আদেশ দেওয়ার আগে আপিল করার জন্য। 

এদিকে, নিউ জার্সির আরেকটি মামলায়, মার্কিন জেলা বিচারক মাইকেল ফারবিয়ার্জ খলিলের প্রথম সংশোধনীর অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বিবেচনায় তার বিতাড়নের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছেন।

শুনানির শেষ দিকে বিচারককে উদ্দেশ করে খলিল বলেন, 'আপনি বলেছেন, আদালতের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার "ন্যায়বিচার ও মৌলিক অধিকার"। কিন্তু আজ যা ঘটেছে, সেখানে এসবের কোনো প্রতিফলন ছিল না। এ কারণেই ট্রাম্প প্রশাসন আমাকে পরিবার থেকে হাজার মাইল দূরে এই আদালতে এনেছে।'

বিচারক কোম্যানসের সিদ্ধান্ত নির্ভর করে একটি দুই পৃষ্ঠার চিঠির ওপর, যেখানে রুবিও খলিলের বিরুদ্ধে 'ইহুদিবিদ্বেষী প্রতিবাদ ও বিশৃঙ্খল কার্যক্রমে' অংশ নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। যদিও চিঠিতে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের উল্লেখ নেই।

খলিলের আইনজীবীরা বলেন, তাদেরকে রুবিওর চিঠি ও প্রশাসনের প্রমাণ পর্যালোচনার জন্য ৪৮ ঘণ্টারও কম সময় দেওয়া হয়। প্রধান আইনজীবী মার্ক ভ্যান ডের হাউট শুনানি পেছানোর অনুরোধ জানালে বিচারক তাকে একাধিকবার 'এজেন্ডা' নিয়ে কাজ করার অভিযোগে সতর্ক করেন।

সিরিয়ার একটি ফিলিস্তিনি শরণার্থীশিবিরে জন্মগ্রহণকারী খলিল আলজেরিয়ার নাগরিক। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হন তিনি। খলিলের স্ত্রী একজন মার্কিন নাগরিক।

শুনানি শেষে খলিলের কয়েকজন সমর্থক আদালত কক্ষ ত্যাগের সময় কেঁদে ফেলেন। খলিল উঠে দাঁড়িয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে হাতের আঙুল দিয়ে হৃদয়ের আকৃতি তৈরি করেন।

তার আইনজীবীরা বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মূলত সরকারবিরোধী বক্তব্য এবং ইসরায়েলের প্রতি সমালোচনার জবাবে তাকে টার্গেট করেছে।

'মাহমুদ যেন ন্যায়বিচারের নাটকীয় একটি প্রক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। এটি তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করার উদ্দেশ্যে অভিবাসন আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জঘন্য উদাহরণ,'—বলেন আইনজীবী ভ্যান ডের হাউট।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আদালত দেশটির বিচার বিভাগ দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এসব আদালতের বিচারকরা নির্বাহী বিভাগের অধীনেই নিয়োগপ্রাপ্ত।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল