তাসনীম সিদ্দিকা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) তিন মাসব্যাপী "জীবন ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মৌমাছি পালন" বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপ্তি ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টার মিলনায়তনে এই সমাপনী অনুষ্ঠানটি হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে "বাংলাদেশে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি" শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়েছিল।
বাকৃবির কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জি এম মুজিবর রহমান, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, কোষাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবির, জার্মপ্লাজম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান প্রামানিক, কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবা জাহান৷ এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীরা।
জানা যায়, পাঁচ বছর মেয়াদী ‘বাংলাদেশে তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদনশীল বৃদ্ধি’ শীর্ষক প্রকল্পটি শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় গত ২১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ ব্যাচের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন উপজেলায় কর্মর্ত ৩২ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
এসময় উপস্থিত একজন প্রশিক্ষক বলেন, বাংলাদেশে তেল জাতীয় ফসলের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই প্রতি বছরই আমাদের আমদানি নির্ভর থাকতে হতো। কিন্তু গত বছর তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন ৪ লক্ষ হেক্টর বেড়েছে। এর ফলে ৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি কমেছে।
প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী একজন প্রশিক্ষণার্থী বলেন, তিন মাসব্যাপী কোর্সটি স্বপ্নের মতো ছিল। আমরা যারা হাতে কলমে শিক্ষার সুযোগ পেয়েছি তারা সত্যি সৌভাগ্যবান। এখানে আমরা মৌমাছির খুঁটিনাটি সব জেনেছি। মৌমাছি বিলুপ্ত হলে চার বছরের মধ্যে মানব প্রজাতি বিলুপ্ত হবে। এখানে মৌমাছির জীনচক্র, গঠন, প্রকারভেদ, প্রজনন, মধু সংগ্রহ সবকিছুই জানতে পেরেছি। আমরা যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছি, তারা মাঠ পর্যায়ে জ্ঞান প্রয়োগ করতে পারব বলে আশা করছি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, আজকে যারা কিছু সীমাবদ্ধতার পরেও এই প্রশিক্ষণটি সম্পন্ন করেছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করি প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে আপনারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার সাথে অবদান রাখতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, যে কোন ধরনের প্রশিক্ষণ যেগুলোর মাধ্যমে আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা তাদের জ্ঞান সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারেন, মানুষের জীবন, জীবিকা ও কৃষির সমৃদ্ধিতে অবদান রাখে, সেধরনের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিলে বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্যই সাহায্য করবে। আমি চাই এই ধরনের প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক। পাশাপাশি যেসব সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করলে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও সুন্দর ও অংশগ্রহণমূলক হবে, সে বিষয়গুলো যত দ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবনা দিবেন, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করব।
এমআই