সময় জার্নাল প্রতিবেদক : আলোচিত নায়িকা পরীমনিকে হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টা এবং পুলিশের মাদক মামলায় সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। জামিনে বের হয়ে সে দিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন তিনি। পাঠকদের জন্য পোস্টটি তুলে ধরা হলো।
প্রিয় বন্ধুরা, সম্প্রতি আমাকে নিয়ে প্রচারিত একটি মিথ্যা ঘটনা নিয়ে পরিমনি কর্তৃক যে অপ-প্রচার করা হয়েছে তা আপনারা ইতিমধ্যেই অবগত হয়েছেন। আপনাদের সদয় অবগতির জন্য সেদিন আসলে কি ঘটেছিল তা আমি বলতে চাই।
আমি ঢাকা বোট ক্লাবের কার্যকরি পরিষদের একজন সদস্য হিসেবে ক্লাবের ডিসিপ্লিন, মেনটেইনেন্স, কালচারাল এফেয়ার্স ও এন্টারটেইনমেন্টের দায়িত্বে নিয়োজিত। সেদিন রাত আনুমানিক ১২টায় বোট ক্লাবেরই একজন সদস্যের সাথে ৩ জন অতিথি ক্লাবের বারে প্রবেশ করেন।
আমি তখন অন্য টেবিলে অন্য সদস্যদের সাথে বসে ছিলাম। আমি দুর থেকে লক্ষ করছিলাম তারা মদ্যপ অবস্হায়ই ক্লাবে প্রবেশ করেন। এ অবস্হায় তারা আমাদের পাশের একটি টেবিলে বসেন এবং ওয়েটারদের ড্রিন্কসের বোতল দিতে বলেন। ওয়েটাররা ১ বোতল ড্রিন্কস টেবিলে সার্ভ করেন এবং তা অতি দ্রুত তারা শেষ করে ফেলেন এবং আরো ১ বোতল ড্রিন্কস টেবিলে আনান এবং সেই বোতলের অর্ধেকেরও বেশি শেষ করে ফেলেন। এসময় নিয়ম বহির্ভুত ভাবে পরিমনি (যার নাম আমি পরে জেনেছি) একটি দামি ৩ লিটারের "ব্লুলেবেল" এর বোতল বারের সেলফ হতে নিজ হাতে তুলে নিয়ে টেবিলে আসেন এবং তার সাথে নিতে চান। এসময় ওয়েটাররা তা নিতে বাধা প্রদান করলে পরিমনি ক্ষিপ্ত হন এবং ওয়েটারদের সাথে কথা কাটাকাটি ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন এবং একপর্যায়ে টেবিলে রক্ষিত প্লেট গ্লাস অনবরত ছুড়ে ভাঙতে থাকেন।
যেহেতু আমি ক্লাবের ডিসিপ্লিনারি ইনচার্জ সেহেতু বিষয়টির ব্যাপারে ওয়েটাররা আমার সাহায্য চায়, তখন আমি পরিমনিদের টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে বলি এই ড্রিন্কসের বোতল বিক্রি যোগ্য নয়। ওই সময় পরিমনি আমাকে তুই-তাকারি করে অকথ্য গালিগালাজ শুরু করেন এবং টেবিলে রক্ষিত প্লেট, গ্লাস ছুড়ে মারতে থাকেন। আমি তাকে বার বার অনুরোধ করি যাতে তিনি এসব থেকে নিভৃত হন। কিন্তু পরিমনি তা কর্ণপাত না করে তিনি আমাকে লক্ষ করে গ্লাস ছুড়তে থাকেন এবং একসময় একটি গ্লাস আমার ঘাড়ে লাগে। পরে আরো গ্লাস ছুড়তে চেষ্টা করলে আমি তাকে শান্ত হতে বলি। সেই মুহুর্তে তার সাথে আগত জিমি (পরে নাম জেনেছি) আমার উপর চড়াও হয়। এ অবস্হায় ক্লাবের বাইরে দায়িত্বরত সিকিউরিটি স্টাফদের ডাকি। কিছুক্ষণ পরেই ক্লাবের সিকিউরিটিগণ উপস্থিত হন এবং বলি তাদের ক্লাব থেকে বের করে দাও, এ কথা বলে আমি ক্লাব ত্যাগ করি।
ঘটনার ৪/৫ দিন পর পরিমনি একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাস দেন এবং এর কিছুক্ষণ পর তিনি একটি সংবাদ সন্মেলন করেন। সেখানে আমাকে নিয়ে তার এহেন মিথ্যাচারে আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি।
প্রিয় বন্ধুরা, ইতিমধ্যেই সন্মানিত সাংবাদিক ভাইদের এবং ইলেকট্রনিক সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজ ও প্রচারিত সংবাদের মাধ্যমে আপনারা ঘটনার চিত্র নিশ্চয়ই দেখেছেন এবং সত্যিকারের ঘটনাটি অনুধাবন করতে পেরেছেন। আমি সাংবাদিক ভাইদের প্রতি এ জন্য কৃতজ্ঞ।
দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও মহামান্য আদালতের প্রতি আমার পূর্ণ আস্হা ও বিশ্বাস রয়েছে। আমার বিশ্বাস আমি ন্যায় বিচার পাবো।
পরিশেষে বলতে চাই, অভিনেত্রীর সাজানো নাটকে আমার মতো একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তির সারা জীবনের অর্জিত সম্মান যেভাবে ধুলিষ্যাৎ করা হয়েছে তা যেনো আর কারো জীবনে না ঘটে। সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।
সময় জার্নাল/এসএ