তামান্না আক্তার , খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
প্রকৃতির শোভায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকজুড়ে ফোটা পদ্মফুল। লালচে-গোলাপি ও সাদা রঙের মনকাড়া পদ্মফুল এখন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে আরও জীবন্ত করে তুলেছে। প্রাত্যহিক ব্যস্ততা, ক্লাস আর গবেষণার ক্লান্তি ভুলে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসছেন এই লেকের ধারে; কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা নিরবে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে আছেন ফুটন্ত পদ্মের দিকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যফেটেরিয়া সংলগ্ন লেকটি বরাবরই সৌন্দর্যের একটি অনন্য অংশ হলেও, এবছর পদ্মফুলের বাহার যেন এক নতুন রূপ দিয়েছে চারপাশকে। লেকের মাঝখান থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে পাড়ঘেঁষা এলাকাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে পদ্মপাতা ও ফুল। বিশেষ করে সকালের প্রথম আলো কিংবা বিকেলের মৃদু সূর্যকিরণে যখন ফুলগুলো নিজেদের সৌন্দর্যে উন্মুক্ত করে, তখন পুরো জায়গাটা যেন এক স্বপ্নময় আবেশ তৈরি করে।
চিন্তায়, চর্চায় আর গবেষণায় ব্যস্ত শিক্ষার্থীদের মনেও এই পদ্মফুল এক স্বস্তির ছোঁয়া এনে দিচ্ছে। ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী নিশাত জাহান বলেন, “প্রতিদিন বিকেলে লেকপাড়ে হাঁটতে আসি। পদ্মফুলের এই অপরূপ সৌন্দর্য যেন ক্লান্ত মনকে জাগিয়ে তোলে।” সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ছাত্র মোস্তফা কামাল বলেন, “এটা শুধু ফুল নয়, এটি আমাদের এই ক্যাম্পাসের অংশ হয়ে উঠেছে। এর সৌন্দর্য মনে প্রশান্তি এনে দেয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মিম ফাহাদ জানিয়েছে, লেকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কোনো রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার না করায় এখানকার জলজ উদ্ভিদগুলো নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে উঠছে, যার ফলেই প্রাকৃতিকভাবে পদ্ম গজাচ্ছে ও ফোটছে।
ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই ফুল শুধুমাত্র প্রকৃতির সৌন্দর্যই নয়, একধরনের জীববৈচিত্র্যের প্রতীকও বটে। পদ্মফুল হচ্ছে জলজ উদ্ভিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি পানি বিশুদ্ধকরার পাশাপাশি নানা জীবের বাসস্থান হিসেবেও কাজ করে।
লেকের পাশে বসে পদ্মফুল দেখতে দেখতে হয়তো কোনো ছাত্রছাত্রীর মনে জেগে উঠবে নতুন কবিতা, নতুন গান, কিংবা গবেষণার নতুন ধারণা। কেননা, প্রকৃতি যেমন দেয় প্রশান্তি, তেমনি জাগায় সৃজনশীলতারও আলো।
এভাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকজুড়ে ফুটে থাকা পদ্মফুল শুধু দৃষ্টিনন্দন নয়, এটি হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের মনের খোরাক, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের গভীর বন্ধনের এক জীবন্ত নিদর্শন।
এমআই