ক্রীড়া প্রতিবেদক:
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আগেরদিন বলেছিলেন, নতুন করে শুরু করতে চান তার। সেই নতুন শুরুর নমুনা আজ সিলেটে দেখিয়ে দিলো বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। যে জিম্বাবুয়ে টেস্ট খেলার জন্য অনেকটা হাঁস-ফাঁস করে, কেউ তাদের সঙ্গে টেস্ট খেলতে চায় না, সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ঘরের মাঠে প্রথমদিনই ব্যাকফুটে চলে যেতে হলো বাংলাদেশ দলকে।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ের বোলিংকে মোটেও সামলাতে পারেনি টাইগাররা। অলআউট হয়েছে ১৯১ রানে। এরপর ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ে খেলেছে ১৪.১ ওভার। এর মধ্যে একটি উইকেটও নিতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা।
প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৭ রান। এখনও ১২৪ রান পিছিয়ে তারা। তবে, প্রথমদিন যেভাবে খেলেছে, তাতে সফরকারী জিম্বাবুয়েই অনেকটা এগিয়ে থাকলো।
বলা হচ্ছিলো সাকিব-তামিম, মাহমুদউল্লাহরা না থাকার কারণে একটা ক্রান্তিকালীন সময় পার করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট; কিন্তু পঞ্চ পাণ্ডবের অন্যতম সদস্য মুশফিকুর রহিম তো রয়েছেন দলে। তিনিও তো কিছু করতে পারলেন না। জিম্বাবুয়ে বোলিংকে সারাজীবন মোকাবেলা করে আসার পরও তিনি আউট হয়ে যান ১৮ বল খেলে মাত্র চার রানে।
ওয়েলিংটন মাসাকাদজার অফ স্ট্যাম্পের ওপর বলটিকে তিনি অন-সাইডে যে কোনো শট খেলতে পারতেন। সামনের পা ক্লিয়ার করে মিড উইকেটে সোজা খেলতে গেলেন এবং সহজে তুলে দিলেন ফিল্ডার বেনেটের হাতে। বোকার মত আউট হয়ে গেলেন তিনি। অথচ শততম টেস্ট খেলার (এই ম্যাচ নিয়ে খেলছেন ৯৫তম টেস্ট) একেবারে নিকটে রয়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
মুমিনুল হক ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই ঠিকমত দাঁড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ে বোলারদের সামনে। ১০৫ বল খেলে ৫৬ রান করেন মুমিনুল। এছাড়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। জাকের আলি অনিক করলেন ২৮ রান।
তবে বাংলাদেশের ব্যাটারদের আউট হওয়ার ধরন ছিল বেশ দৃষ্টিকটু। কত দ্রুত উইকেট হারিয়ে আসতে পারে সে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিল যেন তারা। টেস্ট খেলতে গিয়েছিলো টি-টোয়েন্টি স্টাইলে। যার ফলশ্রুতিতে ৬১ ওভার ব্যাট করে ১৯১ রানে অলআউট। মেহেদী হাসান মিরাজের মতো মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে পারা ব্যাটার আউট হলেন ১ রান করে।
জিম্বাবুয়ে বোলারদের মধ্যে ব্লেসিং মুজারাবানি এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজা নেন ৩টি করে উইকেট এবং ২টি করে উইকেট নেন ভিক্টর এনইউচি ও ওয়েসলি মাধভিরে।
বাংলাদেশকে কম রানে বেধে ফেলার পর ব্যাট করতে নেমে খুব ধীরে-সুস্থে নিজেদের জুটি তৈরি করছে জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট এবং বেন কারান। ১৪.১ ওভার ব্যাট করে ৬৭ রান তুলেছে কোনো উইকেট না হারিয়ে। রান তোলার হারও ভালো, ৪.৭২ করে। অথচ, উইকেটে যেন মাটি কামড়ে পড়ে আছে তারা। বেনেট ৪০ এবং বেন কারান ব্যাট করছেন ১৭ রান নিয়ে।
হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা কিংবা খালেদ আহমেদের মত পেসার এবং মেহেদী হাসান মিরাজের মত স্পিনাররা কোনো ধাক্কাই লাগাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে শিবিরে।