আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনিতে কালো ধোঁয়া দেখা গেছে, অর্থাৎ প্রথমদিন রোমান ক্যাথলিকদের ধর্মগুরু পোপ নির্বাচন করতে পারেননি কার্ডিনালরা। বৃহস্পতিবার আবারও পোপ নির্বাচনে সমবেত হবেন কার্ডিনালরা। খবর: বিবিসির।
উল্লেখ্য চিমনিতে সাদা ধোঁয়া বের হলেই ধরে নিতে হবে যে রোমান ক্যাথলিকরা নতুন পোপ পেয়ে গেছেন।
এর আগে বুধবার (৭ মে) সকালে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় প্রার্থনা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পোপ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এই আয়োজনে সভাপতিত্ব করছেন ৯১ বছর বয়সী কার্ডিনাল ডিন জিওভান্নি বাতিস্তা রে।
নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য ভ্যাটিকানে জড়ো হয়েছেন বিশ্বের ১৩০ জনের বেশি কার্ডিনাল। ভ্যাটিকান সময় বুধবার বিকেলে তারা বিখ্যাত রেনেসাঁ ফ্রেস্কোর নিচে ভোট দেওয়ার জন্য সিস্টিন চ্যাপেলে যান।
এদিকে পোপ নির্বাচন ঘিরে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে সমবেত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কে হচ্ছেন নতুন পোপ তা জানার জন্য। তবে প্রথমদিন সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনিতে কালো ধোঁয়া দেখেই তারা নিশ্চিত হয়েছেন আজ পোপ নির্বাচিত হননি। এর মধ্যদিয়ে তাদের অপেক্ষা আরও দীর্ঘায়িত হলো।
গত ২১ এপ্রিল ৮৮ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন পোপ বেছে নেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে। দিনটি রীতিনীতিতে পরিপূর্ণ এবং সিস্টিন চ্যাপেলে অত্যন্ত গোপনীয় ভোটের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
নতুন পোপ নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া কতক্ষণ স্থায়ী হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। সাম্প্রতিক কনক্লেভগুলো মাত্র কয়েক দিন স্থায়ী হয়েছিল, যদিও আগের শতাব্দীগুলোতে মতবিরোধের কারণে মাসের পর মাস ধরেও চলতে থাকে পোপ নির্বাচন প্রক্রিয়া।
নিয়ম অনুযায়ী, পোপের মৃত্যুর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে কার্ডিনালদের অবশ্যই ভ্যাটিকানে পৌঁছাতে হয়। তারা বিশেষভাবে নির্ধারিত বাসস্থানে অবস্থান করেন। নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য সম্মেলন পরিচালনা করেন এবং তারাই ভোট দিয়ে পরবর্তী পোপ নির্বাচিত করেন।
পোপ নির্বাচনের জন্য ভ্যাটিকানে গোপন সম্মেলন বা কনক্লেভ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রায় ১২০ জন কার্ডিনাল ভোটদান প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। যদিও বিশ্বব্যাপী কার্ডিনালের সংখ্যা প্রায় ১৯৫; তবে ৮০ বছরের বেশি বয়সী কার্ডিনালদের ভোট দেওয়ার অনুমতি নেই।
দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেলে নির্বাচিত কার্ডিনালকে পোপ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তিনি জয় স্বীকার করলে পরবর্তী পোপ হন। যদি কোনো কার্ডিনাল দুই-তৃতীয়াংশ ভোট না পান তখন সব ভোটের স্লিপ নির্দিষ্ট চুল্লিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
সেই চুল্লির চিমনি দিয়ে কালো ধোঁয়া দেখেই সবাই বুঝতে পারেন পোপ নির্বাচন হয়নি। তখন আবার একই প্রক্রিয়া শুরু হয়। পোপ নির্বাচনের জন্য এই ভোটাভুটি এবং আলোচনা সবই হয় একটি বন্ধ কক্ষে।
পোপ নির্বাচন হলে শুরু হয় নাম ঘোষণার প্রক্রিয়া। ভ্যাটিক্যানে সেই সময়ের মধ্যেই জড়ো হন প্রচুর মানুষ। ঊর্ধ্বতন কোনো কার্ডিনাল তখন পোপের নতুন নাম ঘোষণা করেন। নতুন পোপ নতুন পোশাক পরে জনসম্মুখে আসেন। এরপর পরেন ফিশারম্যান রিং। ঈশ্বরের নামে শপথ নেওয়ার পর ভ্যাটিক্যানের ব্যালকনি থেকে ভাষণ দেন তিনি।
সময় জার্নাল/এলআর