আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলের হামলার জবাবে ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে ইরান। 'অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩' নামক এ অভিযানে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এতে একজন নিহত ও অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া ফক্স নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল ইসরায়েলের সামরিক সদর দপ্তর 'কিরিয়াত'-এ সরাসরি আঘাত হানে—যা দেশটির জন্য 'পেন্টাগন'-এর সমতুল্য।
ফক্স নিউজের প্রধান আন্তর্জাতিক সংবাদদাতা ট্রে ইংস্ট তেল আবিব থেকে সরাসরি সম্প্রচারে বলেন, এই কম্পাউন্ডের একটি ভবন সরাসরি হামলার শিকার হয়েছে। ভবনটির বড় রকমের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ইরানেও দফায় দফায় নতুন করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইসফাহান শহরে নতুন করে চালানো ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহতের চেষ্টা করছে।
এছাড়া বার্তা সংস্থা তাসনিম জানায়, তেহরানের পূর্বাঞ্চলের হাকিমিয়েহ ও তেহরানপারস এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এর আগে তেহরানের মেহরাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, যার ফলে সেখানে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
ফক্স নিউজের ইংস্ট বলেন, রাতে ইরান থেকে প্রায় ১৫০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ইসরায়েলের দিকে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
ফক্স নিউজ একাধিক আঘাতস্থলে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র প্রত্যক্ষ করেছে। ইংস্ট বলেন, 'গোটা একটি ব্লক প্রায় সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, যেন মানচিত্র থেকেই মুছে গেছে।'
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যেমন আয়রন ডোম, ডেভিড'স স্লিং, অ্যারো, প্যাট্রিয়ট ও থাড সক্রিয় থাকার পরও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে আঘাত হানতে পেরেছে।
ইংস্ট বলেন, 'এটি [প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা] এই হামলা প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট নয়। আমরা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মাটিতে আছড়ে পড়া দেখেছি—তীব্র ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং অন্তত একজন নিহত হয়েছেন।'
গতকাল ইরানের বিভিন্ন শহর, সামরিক স্থাপনা ও পারমাণবিক কেন্দ্রে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে ৬ জন, পরমাণুবিজ্ঞানী ও একাধিক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাসহ এ পর্যন্ত ৭৮ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। আহত হয়েছেন ৩২০ জনেরও বেশি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এ হামলার জন্য ইসরায়েল যেন 'চরম শাস্তির জন্য প্রস্তুত থাকে'।
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের 'অপারেশন রাইজিং লায়ন' নামক সামরিক অভিযান যত দিন প্রয়োজন, তত দিন চলবে।