জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বাড়ির ভিটার জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। হামলাকারীদের মধ্যে চারজনকে স্থানীয় জনতা আটক করে ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখলে, পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে, যার পরিপ্রেক্ষিতে চার পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের পূর্ব রাবাইতারি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের ছেলেদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির ভিটার জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এর জেরে বড় ভাই মাহাবুর রহমান ভাড়াটে লোকজন ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ছোট ভাই মফিজুল ইসলামের (৪০) বাড়িতে হামলা চালান। হামলায় মফিজুল, তার স্ত্রী রেহেনা বেগম (৩৫) এবং ভাবি হালিমা বেগম (৫০) গুরুতর আহত হন।
চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা মাহাবুর রহমানসহ চারজনকে আটক করে একটি ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় হামলায় ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রও জব্দ করা হয়।
পরে জাতীয় জরুরি সেবা (৯৯৯) থেকে ফোন পেয়ে ফুলবাড়ী থানার চার পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু উত্তেজিত জনতা পুলিশের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলে এবং অস্ত্র ও লিখিত কাগজপত্রের দাবি জানান। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে জনতার বাকবিতণ্ডা হয়।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে জনতাকে শান্ত করে এবং অবরুদ্ধদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন: মাহাবুর রহমান (৪৫), মারুফ রহমান (২০), বিলকিছ বেগম (৩৫) ও মুকুল মিয়া (২০)।
ঘটনার পর সন্ধ্যায় কুড়িগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (নাগেশ্বরী সার্কেল) মোজাম্মেল হক, ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস ছালামসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক জানান, “ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ফুলবাড়ী থানার চার পুলিশ সদস্য—এসআই আব্দুর রশিদ, এএসআই শামিম, এএসআই শাহানুর ও কনস্টেবল দুলাল চন্দ্রকে তাৎক্ষণিকভাবে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।”