জাকারিয়া শেখ,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি :
জীবনের প্রতিটি ধাপে সন্তানের পাশে এক অবিনাশী ছায়ার মতো যে মানুষটি দাঁড়িয়ে থাকেন, তিনি ‘বাবা’। নিঃশব্দ, নিরব, কিন্তু পাহাড়সম দৃঢ়তায় ভরপুর একজন মহান ব্যক্তিত্ব। জুন মাসের তৃতীয় রবিবার বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘বিশ্ব বাবা দিবস’। এই দিনে সন্তানেরা একটু আলাদাভাবে স্মরণ করে তাদের জীবনের প্রথম নায়ক, ছায়াসঙ্গী এই মানুষটিকে।
পৃথিবীর প্রতিটি বাবাই যেন এক একজন নীরব যোদ্ধা। নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে সন্তানের ভবিষ্যতের ভিত গড়ে তোলার জন্য জীবনভর ছুটে চলেন। সূর্যের প্রখর রোদ হোক কিংবা কনকনে শীত—বাবার দায়িত্ব থেমে থাকে না কখনোই। সন্তানের মুখের হাসিই তার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।
ফুলবাড়ী উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সাজেদুল হক (৬৫) জানালেন,“ছেলেমেয়েদের মুখে হাসি দেখাই বাবার সবচেয়ে বড় আনন্দ। ওদের পড়াশোনা, চাকরি, সংসার—সবকিছু গুছিয়ে উঠলে মনে হয় নিজের জীবনটা সার্থক হয়েছে।”
বাবার ভালোবাসা কখনো জোরালো শব্দে প্রকাশ পায় না, তা হয় গভীর, সংযত এবং দৃঢ়। আমরা অনেকেই হয়তো উপলব্ধি করি না, বাবার মুখের নিচু স্বরেই লুকিয়ে থাকে হাজারো চিন্তা আর নিঃশব্দ ভালোবাসার কথা।
তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও এখন বাবার অবদান নিয়ে নতুন করে ভাবনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই বাবার সঙ্গে তোলা পুরনো ছবি পোস্ট করছেন, কেউ বাবার জীবনের লড়াই নিয়ে লিখছেন আবেগময় স্ট্যাটাস। অনেকেই আবার নিজের জীবনের বাঁকে এসে বুঝতে পারছেন, বাবা কেমন করে প্রতিটি ছোট ছোট চাহিদা পূরণে অদৃশ্য সৈনিকের মতো কাজ করে গেছেন।
বিশ্ব বাবা দিবস যেন কেবল একদিনের আনুষ্ঠানিকতা না হয়ে ওঠে—এই হোক আমাদের মূল অঙ্গীকার। কারণ বাবা কোনো একটি সম্পর্কের নাম নয়, তিনি এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি—ত্যাগ, দায়িত্ব, পরিশ্রম আর সীমাহীন ভালোবাসার প্রতীক।
আজকের দিনে তাই প্রতিটি সন্তানের কণ্ঠে উঠে আসে একটিই বাক্য—
“বাবা, তোমার ছায়া আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় আশ্রয়।”