মোহাম্মদ মুরাদ হোসেনঃ
অবৈধভাবে হলে ওঠা নিয়ে খবর প্রকাশ করায় ছাত্রদলকর্মী শামীম আশরাফীর নেতৃত্বে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (হাবিপ্রবিসাস) অফিসকক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, গত রবিবার (২৯ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলের ৫০৮ নম্বর কক্ষে অবৈধভাবে ওঠে এক শিক্ষার্থী। কিন্তু এর আগেই একজনকে ওই কক্ষে সীট বরাদ্দ দেওয়ায় তাকে সীট ছেড়ে দিতে বলেন ওই হলের হল সুপার। এই সংবাদ প্রকাশ করায় গতকাল রাত থেকেই সাংবাদিক সমিতির বিপক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী। শামীম আশরাফী নামের এক কর্মী হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতিকে ক্ষমা চাওয়ার এবং তা না করলে নতুনভাবে সাংবাদিকতা শেখানো হবে বলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। সোমবার (৩০ জুন) আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ টায় ওই ছেলে সাথে আরও কয়েকজনকে নিয়ে সাংবাদিক সমিতির অফিসরুমে আসে এবং ক্যাফেটেরিয়ায় থাকা কর্মচারীর থেকে অফিসরুমের চাবি দাবি করেন। চাবি না দেওয়ায় শামীম আশরাফী ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন এবং লাথি মেরে অফিসরুমের কাঁচের দরজা ভেঙে ফেলেন। তবে ওই সময় ওই কক্ষে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির কোন সদস্য ছিলোনা। তাদেরকে না পেয়ে সে ভাঙচুর করে চলে যায়।
ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফাহিমুল্লাহ বলেন, হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির অফিসরুম ভাংচুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য কালো থাবা। এহন নিকৃষ্ট কাজ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের আমলেও করার কেউ সাহস দেখায় নি। হাবিপ্রবি ছাত্রদল কর্মীদের পোস্ট এবং কমেন্ট সেই সাথে আহ্বায়কের নীরবতা প্রমাণ করে এই হামলায় পিছনে তাদের ইন্ধন রয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংগঠনকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই, হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একইসাথে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও ক্যাম্পাসে মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ বজায় রাখা প্রশাসনের মৌলিক দায়িত্ব। হাবিপ্রবিসাস সবসময় দায়িত্বশীল ও তথ্যভিত্তিক সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করে। হুমকি-ধমকি কিংবা হামলা আমাদের দমন করতে পারবে না। বরং সত্যের পক্ষে আমাদের অঙ্গীকার আরও শক্তিশালী হবে।
হাবিপ্রবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক বার্নার্ড পলাশ জানান, শামীম আশরাফী নামের কাউকে চিনেন কিনা মনে পড়ছে না। নাম ধরে কাউকে অভাবে মনে নেই। সাংবাদিক সমিতির রুম ভাংচুরের বিষয়ে তার সাথে আমার কথা হয় নি।
এদিকে ক্যাম্পাসে শামীম আশরাফীকে হাবিপ্রবি ছাত্রদলের সকল প্রোগ্রামে সামনের সারিতে আহবায়ক ও সদস্য সচিবের পাশে দেখা গেছে।
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা বলেন, ভাঙচুর হওয়া অফিস রুম পরিদর্শন করেছি এবং আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এ ধরনের ভাঙচুরের ঘটনা এবারই প্রথম। প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতায় আমি একজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। যারা যারা এ কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ এনামউল্যা বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আমি নিজে বিষয়টি দায়িত্ব নিয়ে দেখবো এবং প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যন্য শিক্ষকদের সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নিবো।