বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

প্রজ্ঞাপনের পরও থামছে না ইউক্যালিপটাস রোপণ, ফুলবাড়ীতে ৯০ হাজার চারা ধ্বংস

বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৭, ২০২৫
প্রজ্ঞাপনের পরও থামছে না ইউক্যালিপটাস রোপণ, ফুলবাড়ীতে ৯০ হাজার চারা ধ্বংস

জাকারিয়া শেখ, ফুলবাড়ি (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা:

পরিবেশ রক্ষায় সরকারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা রোপণ ও বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। তবে এ অবস্থায় মাঠপর্যায়ে সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন। উপজেলার দুটি নার্সারি থেকে মোট ৯০ হাজার ইউক্যালিপটাস চারা ধ্বংস করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

১৭ জুলাই বৃহস্পতিবার উপজেলার রাবাইতারি গ্রামের রেখা নার্সারি এবং নাওডাঙ্গা পুলেরপাড় গ্রামের তৌহিদ নার্সারিতে অভিযান চালিয়ে এসব চারা ধ্বংস করা হয়। নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহেনুমা তারান্নুম। উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) তানভীর আহম্মেদ সরকার, উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দসহ আরও অনেকে।

উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন বলেন,“পরিবেশ রক্ষা মানেই মানুষের জীবন রক্ষা। ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ অতিরিক্ত পানি শোষণ করে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস করে। এটি কৃষিকাজ ও প্রকৃতির ভারসাম্যে বিপর্যয় ঘটায়।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেহেনুমা তারান্নুম বলেন,“পরিবেশ ও মানবজীবনের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় সরকারি নির্দেশনার অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।”

চলতি বছরের ১৫ মে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের চারা রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। উপসচিব তুষার কুমার পাল স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে দেশীয় ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ রোপণের নির্দেশনাও দেওয়া হয়।

কিন্তু মাঠপর্যায়ে তেমন কোনো কার্যকর নজরদারি চোখে পড়ছে না। স্থানীয় হাটবাজার, নার্সারি এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বিঘ্নে এই চারা রোপণ অব্যাহত রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে,একটি ইউক্যালিপটাস গাছ প্রতিদিন প্রায় ৫০ ফুট গভীর থেকে পানি টেনে নেয়।এর ফলে আশপাশের জমি পানিশূন্য হয়ে পড়ে, মাটির উর্বরতা কমে যায়।এ গাছের নিচে অন্য কোনো গাছ জন্মাতে পারে না।

অন্যদিকে, আকাশমনি গাছ দ্রুত বর্ধনশীল হলেও এর পাতা ও আবর্জনা মাটিতে বিষাক্ততা সৃষ্টি করে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।  

উপজেলার বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি রোপণ করা হচ্ছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে দেশি ও বিদেশি প্রজাতির পার্থক্য এবং পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতার অভাবই এর মূল কারণ বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা।

এর আগেও ২০০৮ সালে ইউক্যালিপটাস গাছ উৎপাদন ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের অভাবে তা কার্যকর হয়নি। এবার নতুন প্রজ্ঞাপন জারির পরও যদি মাঠপর্যায়ে কঠোর তদারকি না থাকে, তাহলে ফলাফল আগের মতোই হবে—নিষেধাজ্ঞা থাকবে শুধু কাগজে-কলমে।

পরিবেশ রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন, কৃষক, নার্সারি মালিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত সচেতনতা জরুরি। নিষেধাজ্ঞার বাস্তব প্রয়োগ ও পরিবেশ শিক্ষা জোরদার না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিস্থিতি হবে আরও ভয়াবহ।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল