আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজা সিটির একটি ক্যাথলিক গির্জায় ইসরায়েলি সামরিক হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন পোপ লিও চতুর্দশ। হামলার পর পোপ যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং গির্জার পুরোহিত ও পুরো খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর "আত্মিক সংহতি" জানান।
লাতিন প্যাট্রিয়ার্কেট অফ জেরুজালেম এক বিবৃতিতে জানায়, গাজার হলি ফ্যামিলি চার্চে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ট্যাংক শেল আঘাত হানে। এতে ৬০ বছর বয়সী গির্জার কেয়ারটেকার সাদ ইসা সালামেহ, ৮৪ বছর বয়সী ফৌমিয়া লতিফ আয়্যাদ এবং নাজওয়া আবু দাউদ নিহত হন। আহত হন আরও নয়জন, যাদের মধ্যে একজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। গির্জার প্যারিশ পুরোহিত ফাদার গ্যাব্রিয়েল রোমানেল্লি সামান্য আহত হয়েছেন।
চার্চ কম্পাউন্ডে ওই সময় আশ্রয় নিয়েছিলেন গাজার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্তত ৬০০ মানুষ, যাদের মধ্যে ছিলেন শিশুসহ ৫৪ জন প্রতিবন্ধী। তাদের অনেকেই যুদ্ধের শুরুতে নিজ নিজ ঘরবাড়ি হারিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।
চ্যারিটি সংস্থা কারিতাস জেরুজালেম জানিয়েছে, হামলার সময় কয়েকজন ব্যক্তি মূল ভবনের বাইরে অবস্থান করছিলেন। তাদের মধ্যে দুই বৃদ্ধা ‘সাইকো-সোশ্যাল সাপোর্ট টেন্টে’ বসে ছিলেন, যারা গুরুতর আহত হন এবং দেরিতে অ্যাম্বুলেন্সে করে আল-আহলি হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিন তরুণও গুরুতর আহত হন এবং তাদের বেসরকারি গাড়িতে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, “গাজার হলি ফ্যামিলি চার্চে ভুলবশত গুলিবর্ষণের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে দুঃখিত।” ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (IDF) জানায়, “অপারেশন চলাকালীন একটি গোলার টুকরো ভুলক্রমে গির্জায় আঘাত হানে”—এমনটা মনে করা হচ্ছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।
ভ্যাটিকান সূত্রে জানা যায়, পোপ লিও চতুর্দশ নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, “প্রতিটি নিরীহ প্রাণহানি এক একটি ট্র্যাজেডি। শান্তি, সংলাপ ও মীমাংসার জন্য এখনই যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।”
গ্রিক অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্কেট এই হামলাকে "মানব মর্যাদা ও ধর্মীয় স্থানের পবিত্রতার প্রকাশ্য লঙ্ঘন" হিসেবে অভিহিত করেছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, "নাগরিকদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চালানো ইসরায়েলি হামলা গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো সামরিক কর্মতৎপরতাই এর পক্ষে যুক্তি হতে পারে না।"
গত বৃহস্পতিবার গাজায় আরও ২০ জন নিহত হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। চিকিৎসা সূত্র বলছে, তাদের মধ্যে ছিলেন এক দম্পতি ও তাদের পাঁচ শিশু, এবং আটজন যাঁরা ত্রাণবাহী ট্রাক পাহারা দিচ্ছিলেন।
সূত্র: বিবিসি নিউজ
একে