নিজস্ব প্রতিনিধি:
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক ইস্যুতে এরই মধ্যে দুই দফা দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। তৃতীয় দফায় আবারো আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ই-মেইলের মাধ্যমে জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল এ জবাব দেয়া হয়। এছাড়া বাণিজ্য ঘাটতি কমানোসহ সামগ্রিক বিষয় জানিয়ে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাম্বাসেডর জেমিসন গ্রিয়ারকে পৃথক চিঠিও দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে বাংলাদেশ যে কাজগুলো করেছে সেগুলোও পৃথক চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।
শুল্ক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে সেগুলো নিয়ে গত বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই ইস্যুতে গত রোববারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। পর্যালোচনা শেষে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে অবস্থান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চেয়েছে। তারা আশা করছেন, তৃতীয় দফা আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব প্রস্তুতি শেষ করে বাংলাদেশকে সময় দেবে। তাদের সময় পেলে বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে। এর আগে দুই দফা আলোচনায় ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের ওপর নেগোসিয়েশন সম্পন্ন করা হয়েছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কান্ট্রি স্পেসিফিক প্রস্তাব দেয়া হয় বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য। সুনির্দিষ্ট সেই প্রস্তাবে আগের পণ্য বাণিজ্যের পাশাপাশি এখন সেবা বাণিজ্যের বিষয়গুলোও রয়েছে।
গতকাল রাতে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যতটা অগ্রসর হয়েছে—যেমন গম ক্রয়ের চুক্তি, এলএনজির জন্য চুক্তি করা হয়েছে, বিমান ক্রয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে, এ বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে। চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের পাশাপাশি এগুলোও জানানো হয়েছে। বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য এরই মধ্যে যা করা হয়েছে সেগুলোও পত্র দিয়ে জানানো হয়েছে। এছাড়া তাদের সঙ্গে পরবর্তী নেগোসিয়েশনের জন্য সময় জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার সভা শেষে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবার মতামত নিয়ে খসড়া চূড়ান্ত করার দিকে এগোচ্ছি। এটি শেষ করতে আমাদের একদিন লাগবে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শুল্ক আরোপসংক্রান্ত যে ডকুমেন্ট দিয়েছিল সেটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই তাদের সঙ্গে আমাদের মিটিং করার কথা ছিল। কিন্তু তারা গত বুধবারের দিকে আমাদের একটি ই-মেইল দিল যে তোমরা সময় না নিয়ে এসো না, আমাদের অনেক লোক নিয়ে বসতে হয়, প্রস্তুতির ব্যাপার থাকে।’
শুল্ক চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এর জন্য অনেক প্রক্রিয়া আছে। আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে, উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন লাগবে। ফলে এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি আরো পরে আসবে।’
একে