নিজস্ব প্রতিবেদক:
২০২৫ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ নামে দেশভিত্তিক একটি পাল্টা শুল্কনীতি ঘোষণা করেন। এই নীতির মূল লক্ষ্য ছিল দেশটির দেশীয় শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা, বাণিজ্যঘাটতি কমানো এবং ‘অন্যায্য বিদেশি বাণিজ্য অনুশীলন’ প্রতিরোধ করা। নীতির আওতায় সব ধরনের আমদানির ওপর ১০ শতাংশ হারে সর্বজনীন শুল্ক আরোপ করা হয়। পাশাপাশি যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে, তাদের জন্য আলাদা করে বাড়তি শুল্ক ধার্য করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ নীতি নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষতি ও আলোচনার শূনতাসমূহ নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ভূ-রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. সৈয়দ আহসানুল আলম।
অধ্যাপক পারভেজ বলেন, আগস্ট ১ থেকে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৩৫–৩৭% শুল্ক, যা বিদ্যমান প্রায় ১৫% শুল্কের ওপর আরোপিত বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি—রেডি-মেড গার্মেন্টস খাত ~৮০% রপ্তানি, \~১০% জিডিপি —কে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি- মে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৩.৩৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা আগের বছরের তুলনায় ২১% বেশি।
যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে—জরুরি অর্থনৈতিক বৈঠক, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গম আমদানির সমঝোতা স্মারক (MoU), এবং উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনার উদ্যোগ—তবুও রিপাবলিকান নেতৃত্বাধীন (GOP) প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্কের অভাবের কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার শূন্যতা থেকে গেছে।
🔹 এই শুল্ক বৃদ্ধি বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় ও লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থানকে হুমকির মুখে ফেলছে—বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
🔹 গম আমদানির চুক্তি কিছু কূটনৈতিক সদিচ্ছা তৈরি করেছে, কিন্তু বাস্তব অর্জনের জন্য আরও কৌশলী পদক্ষেপ প্রয়োজন:
বাজার বৈচিত্র্য, শিল্পে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা, এবং কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো।
🔹 দ্রুত ও বহুমাত্রিক কৌশল ছাড়া বাংলাদেশ রপ্তানিতে প্রতিযোগিতামূলক দেশগুলোর কাছে পিছিয়ে পড়বে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখনই কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে, নতুন রপ্তানি বাজার খুঁজে বের করতে হবে এবং দেশের বাণিজ্য কৌশলকে আধুনিকায়ন করতে হবে—ওয়াশিংটনে কেবল প্রশাসনের সঙ্গে নয়, বরং উভয় রাজনৈতিক দলের (ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান) সঙ্গেই কার্যকর আলোচনা করতে হবে। সময় খুবই কম।
এমআই