মোঃ মুরাদ হোসেন:
কম্বিনেশন ড্রাগ হলো এমন একটি ওষুধ যাতে একাধিক সক্রিয় উপাদান (Active Pharmaceutical Ingredients–API) একসাথে মিশ্রিত থাকে, যেন একাধিক রোগ উপশম বা একটি রোগের একাধিক দিক একসাথে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
কম্বিনেশন ড্রাগের উদাহরণঃ এসিডিটির জন্য ব্যবহৃত Seclo Plus একটি কম্বিনেশন ড্রাগ। যেখানে Omeprazole এবং Domperidone মিশ্রিত থাকে। এছাড়াও Napa Extra ওষুধে Paracetamol এবং Caffeine মিশ্রিত থাকে যা ব্যথা ও জ্বর কমায়, ঘুমঘুম ভাব দূর করে। দেশ বিদেশে তৈরিকৃত বেশিরভাগ ওষুধই একেকটি কম্বিনেশন ড্রাগ।
কম্বিনেশন ড্রাগ যেভাবে কাজ করেঃ উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক- প্যারাসিটামল শুধু জ্বর বা হালকা ব্যথায় কাজ করে। কিন্তু কারও মাথাব্যথার সঙ্গে ঘুমঘুম ভাব থাকলে সেখানে Caffeine যোগ করলে মাথা ঝিমুনো কমে এবং প্যারাসিটামলের কাজও বাড়ে। একে synergistic effect (একে অপরের প্রভাব বাড়ানো)।
কম্বিনেশন ড্রাগের লক্ষ্যঃ
(১) একই সময়ে একাধিক কার্যকারিতা অর্জন করা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমানো
(২) রোগীর উপর ওষুধের বোঝা কমানো
(৩) পারস্পরিক কার্যকারিতা বাড়ানো (synergistic effect) (৪) খরচ ও সময় সাশ্রয়
অতিরিক্ত গ্রহণঃ অনেক সময় রোগীরা জানেন না যে একটি ওষুধে একাধিক উপাদান আছে (প্যারাসিটামল + ক্যাফেইন)। অনেক সর্দি-কাশির ওষুধে প্যারাসিটামল লুকানো অবস্থায় থাকে। সাথে জ্বর জ্বর ভাব থাকলে আমরা না জেনে প্যারাসিটামল অতিরিক্ত গ্রহণ করে ফেলি। জ্বর আসলে Napa + Napa Extra → ডাবল প্যারাসিটামল খেয়ে ফেলি।প্যারাসিটামল অতিরিক্ত গ্রহণ করলে লিভার মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এজন্য চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধই গ্রহণ করা উচিত নয়।
জানা দরকারঃ কিছু কম্বিনেশন ওষুধের মধ্যে উপাদানগুলো একে অপরের কার্যকারিতা নষ্ট করে দিতে পারে। সব রোগে কম্বিনেশন ওষুধ উপযোগী না, অনেক সময় নির্দিষ্ট আলাদা আলাদা ডোজ প্রয়োজন হয়।
লেখক: মোঃ মুরাদ হোসেন
সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।