সময় জার্নাল প্রতিবেদক: টানা ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের পর বৃহস্পতিবার ভোর থেকে উভয়মুখী যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় বেড়েছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে। ভোর থেকেই ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড় ও আসন্ন কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে দক্ষিণবঙ্গগামী বাড়ি ফেরা মানুষ ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ৪টি ফেরিঘাট চালু করা হয়েছে। এর আগে কঠোর লকডাউনের শুরু থেকে প্রথম থেকে শিমুলিয়া ঘাটের পার্কিং ইয়ার্ডগুলো ছিল যানবাহন ও যাত্রীশূন্য। ফলে ঘাট এলাকায় ৪টি ফেরিঘাটের জায়গায় চালু ছিল মাত্র একটি।
গণপরিবহন চালু হওয়ায় ভোর থেকেই রাজধানী ঢাকা থেকে যাত্রীরা বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলে করে ঘাটে ভিড় করছেন পারাপারের অপেক্ষায়। তবে যানবাহন সংকটে বিপাকে পড়েছেন ঢাকামুখী যাত্রীরা।
ঢাকামুখী এক যাত্রী রমজান মৃধা বলেন, কর্মস্থল খুলে যাওয়ার কারণে মালিকের চাপে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে আবার ঢাকার পথে ফিরতে হচ্ছে তাঁকে। তবে গণপরিবহন চালু হওয়ায় ভোগান্তি কমেছে আগের থেকে অনেকটাই।
ঢাকা ফেরা আরেক যাত্রী তন্ময় বিশ্বাস বলেন, আজ থেকে মার্কেটসহ বিপণিবিতানগুলো খুলে যাওয়ায় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে তাঁর কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে। গণপরিবহনের পাশাপাশি লঞ্চ ও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকায় ঘাত পার হতে পেরেছেন। তবে ঘাট থেকে ঢাকামুখী পরিবহন না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
দক্ষিণবঙ্গগামী এক যাত্রী শরিফ আরমান বলেন, কঠোর বিধিনিষেধ আর লকডাউনের কারণে রাজধানী ঢাকায় এক আত্মীয়র বাড়িতে আটকা পড়েছিলেন তিনি। তবে আজ থেকে লকডাউন শিথিল হওয়ায় পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যাচ্ছেন।
বাড়ি ফেরা আরেক নারী যাত্রী মুক্তা আক্তার বলেন, রাজধানী ঢাকা থেকে সন্তানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন পরিবারের সবার সঙ্গে কোরবানির ঈদ কাটাতে।
তবে ঘাটে যাত্রীদের পাশাপাশি সকাল থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত ঘাটে দুই শতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সসহ পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন।
সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় ফেরিগুলোতে কমেছে যাত্রীর চাপ। তবে লঞ্চগুলোতে নেয়া হচ্ছে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী এতে প্রতি মুহূর্তেই উপেক্ষিত হচ্ছে সরকারি বিধিনিষেধ আর স্বাস্থ্যবিধি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ (নৌ-পরিবহন) বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহ–উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, লকডাউন শিথিল হওয়ায় যাত্রীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে ঘাট এলাকায়। বর্তমানে ১০টি ফেরি দিয়ে চলছে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার তবে বেলা সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বাড়লে ফেরি সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল কবির জানান, ঘাটে মানুষের চাপ গত এক সপ্তাহের তুলনায় আজ অনেক বেশি। লকডাউন শিথিল হওয়াতে ঘাটে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে বিশেষ করে লঞ্চঘাটে উভমুখী যাত্রীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। তবে ঘাটের প্রবেশমুখগুলোতে ঘাট এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আমরা নৌ পুলিশের পক্ষ থেকে যাত্রীদের মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সময় জার্নাল/আরইউ