আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে অবস্থিত নাসের হাসপাতালে সোমবার (২৫ আগস্ট) ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচজন সাংবাদিকও।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, প্রথম দফায় হাসপাতালে হামলার সময় রইটার্সের ক্যামেরাপার্সন হুসাম আল-মাসরি নিহত হন। তিনি হাসপাতালের ছাদের নিচতলায় রইটার্সের লাইভ সম্প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর ইসরায়েলি বাহিনী একই স্থানে দ্বিতীয়বার হামলা চালালে আরও সাংবাদিক, উদ্ধারকর্মী ও চিকিৎসক নিহত হন।
নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন—অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ফ্রিল্যান্সার মারিয়াম আবু দাগ্গা, আল জাজিরার সাংবাদিক মোহাম্মদ সালামা, একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সঙ্গে কাজ করা ফ্রিল্যান্সার মোয়াজ আবু তাহা এবং আহমেদ আবু আজিজ। এ ঘটনায় রইটার্সের ফটোগ্রাফার হাতেম খালেদ আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এ ঘটনাকে "দুঃখজনক দুর্ঘটনা" বলে আখ্যা দিয়েছে। তাঁর ভাষ্য, ইসরায়েলের যুদ্ধ হামাসের বিরুদ্ধে, সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নয়। এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীও হামলার বিষয়টি স্বীকার করে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে।
রইটার্স, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ও আল জাজিরা নিহতদের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে। রইটার্স এক বিবৃতিতে বলেছে, "আমরা ক্যামেরাম্যান হুসাম আল-মাসরির মৃত্যুতে বিধ্বস্ত। এছাড়া মোয়াজ আবু তাহাও নিহত হয়েছেন এবং হাতেম খালেদ আহত হয়েছেন। আমরা দ্রুত চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।"
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমি খুশি নই। এ ধরনের ঘটনা আমি দেখতে চাই না। একই সঙ্গে আমাদের এ দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটাতে হবে।"
এদিকে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্সি ও সাংবাদিক সংগঠনগুলো জাতিসংঘের প্রতি সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ইউনিয়নের দাবি, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় অন্তত ২৪০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সাংবাদিক সুরক্ষা কমিটি (CPJ) জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৯৭ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৮৯ জনই ফিলিস্তিনি।
এছাড়া একই দিনে খান ইউনিসের মাওয়াসি এলাকায় একটি তাঁবু শিবিরে ইসরায়েলি গুলিতে স্থানীয় সাংবাদিক হাসান দোহান নিহত হন। এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে আল জাজিরার সাংবাদিক আনাস আল-শরীফ ও চারজন সাংবাদিককে ইসরায়েলি হামলায় হত্যা করা হয়।
গাজায় বিদেশি সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। ফলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম মূলত স্থানীয় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের ওপর নির্ভর করছে।
একে