বুধবার, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাডিম আহমেদ টিটোর বিরুদ্ধে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে যোগদানের পর থেকেই তিনি অনিয়মের মাধ্যমে দপ্তরের বিভিন্ন মেরামত ও নির্মাণকাজ করা, ওটিএম করে নিজের পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কার্যাদেশ প্রদান, কাজের প্রাক্কলিক মূল্য আগেই পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধিকাংশ ওটিএম দরপত্র তার পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে আসছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীর দরজায় ফিঙ্গার প্রিন্ট লক লাগিয়ে সাংবাদিকসহ সর্ব-সাধারনের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সপ্তাহের একদিনের অফিসের ভেতরে বসে প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ টিটো পছন্দের ঠিকাদারদের নিয়ে গোপনে অবৈধ সুবিধা হাতিয়ে নিয়ে ফাইলে স্বাক্ষর করছেন বলে জানা গেছে।
এ কারণে অনেক নামকরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করার সক্ষমতা থাকা সত্বেও কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া প্রকৌশলী নাসিম আহমেদ টিটো সপ্তাহে মাত্র এক দিন অফিস করেন বলে অফিস সহকারী সূত্রে জানা গেছে। তিনি দুপুর ১২টার দিকে এসে আড়াইটার দিকে অফিস ত্যাগ করেন। এ সময়ে তার পছন্দের ঠিকাদার ছাড়া অন্য ঠিকাদারদের সঙ্গে তিনি ঠিকমতো কথাও বলেন না। দরজায় ফিঙ্গার প্রিন্ট লাগিয়ে গোপন আঁতাত করেন। ফ্যাসিস্ট পরিবারের সন্তান নাসিম আহমেদ টিটো নিজেও ফাসিস্ট রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঠিকাদারদের চাপ দিয়ে তার সরকারি অফিসকে ব্যক্তিগত বেডরুম বানিয়ে নিয়েছেন।
এই নিয়ে সাংবাদিকরা নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জানতে চাইলে, তিনি সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলতে চাননি। দরজায় ফিঙ্গার প্রিন্ট লক দিয়ে ভেতরে বসে ঘাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন ঠিকাদার জানান, প্রতি বছর প্রায় ৩-৪ কোটি টাকার এপিপি (মেরামতের) কাজ আসে। এ কাজগুলো নির্বাহী প্রকৌশলী তার নিজস্ব কিছু ঠিকাদারের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে বণ্টন করেন। অনেক তালিকাভুক্ত ঠিকাদার এসব কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি তিনি বেনামি ভাউচার করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছেন। দপ্তরের বিভিন্ন মেরামত ও নির্মাণকাজ ওটিএম করে তার পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করেন। তিনি কাজের প্রাক্কলিক মূল্যের আগেই পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেন। অবৈধ সুবিধা নিয়ে কিছু প্রভাবশালী ঠিকাদারকে নিয়মিত কাজ পাইয়ে দেন এ প্রকৌশলী। অন্য ঠিকাদাররা প্রতিবাদ জানালে অফিসের ভেতর তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। কাজ না দেওয়ার হুমকি দেন। আর এভাবে তিনি সরকারি অর্থ লোপাট করছেন।
এছাড়া বিভিন্ন দরপত্র গণপূর্ত অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট এবং জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ না করে তার পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। নিয়মের বাইরে গিয়ে রিকোয়েস্ট ফর কোটেশন (আরএফ কিউ) করে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এমআই