°
‘তবে কি তোমরা আল্লাহর কিতাবের কিছু অংশ বিশ্বাস কর, আর কিছু অংশ অবিশ্বাস কর? তোমাদের মধ্যে যারা এরূপ করে, পার্থিব জীবনে তাদের দুর্গতি ছাড়া কিছুই পাওয়ার নেই। আর ক্বিয়ামতের দিন তাদেরকে কঠোরতম শাস্তির দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। বস্ত্ততঃ আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে উদাসীন নন’। ‘এরাই হ’ল সেই সব লোক, যারা আখেরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবনকে খরীদ করেছে। অতএব তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না’ (বাক্বারাহ ২/৮৫-৮৬)।
এটা নিশ্চিত যে, যে ব্যক্তি যাকে ভালবাসে, সে ব্যক্তি তার সবকিছু মেনে চলে। তার ভালবাসা যত গভীর হয়, তার আনুগত্য তত বৃদ্ধি পায়। অতএব তার ব্যক্তি জীবন ও সমাজ জীবন তত বেশী সুখময় হবে এবং আল্লাহর প্রতি যার ভালবাসা যত বেশী হবে, সে তত বেশী ইবাদতের স্বাদ পাবে।
-ইবাদতের স্বাদ বৃদ্ধির উপায় সমূহঃ
(১) নেকীর কাজে প্রতিযোগিতা করা :-
আল্লাহ বলেন ‘তোমরা প্রতিযোগিতা কর তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে। যার প্রশস্ততা আকাশ ও পৃথিবীর প্রশস্ততার ন্যায়। যা প্রস্তুত করা হয়েছে ঐসব লোকের জন্য, যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের উপর। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ। তিনি এটা দান করেন, যাকে তিনি ইচ্ছা করেন। বস্তুত আল্লাহ মহান কৃপার অধিকারী’ (হাদীদ ৫৭/২১)। এর অর্থ নেকীর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা। যা আল্লাহর ক্ষমাকে ওয়াজিব করে (কুরতুবী)।
(২) নেকীর কাজ দ্রুত করা :-
কোন সৎকর্মের সুযোগ এলেই সাথে সাথে তাতে অংশগ্রহণ করা সত্যিকার মুমিনের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ বলেন,‘আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে দ্রুত ধাবিত হও। যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীন পরিব্যপ্ত। যা প্রস্তুত করা হয়েছে আল্লাহভীরুদের জন্য’ (আলে ইমরান ৩/১৩৩)। এ কারণেই আউয়াল ওয়াক্তে ছালাত আদায়কে সর্বোত্তম আমল বলা হয়েছে।[1] জুম‘আর আযানের সাথে সাথে দ্রুত মসজিদে যাওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে (জুম‘আ ৬২/৯)।
(৩) নেকীর কাজে কষ্ট স্বীকার করা :-
আল্লাহ স্বীয় নবীকে বলেন,'অতঃপর নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। অতএব যখন অবসর পাও, ইবাদতের কষ্টে রত হও এবং তোমার প্রভুর দিকে রুজূ হও’ (শরহ ৯৪/৫-৮)। কষ্টের সাথে পুর্ণভাবে ওযূ করা, এশা ও ফজরের জামা‘আতে যোগদান করা, শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়া, কষ্টের সময় ও সচ্ছলতার সময় আল্লাহর পথে ব্যয় করাকে হাদীছে সর্বোত্তম আমল বলা হয়েছে। এভাবে যারা আল্লাহর পথে কষ্ট করে, আল্লাহ তাদেরকে দ্রুত সরল পথ প্রদর্শন করেন।
°
(৪) নফল ইবাদত বেশী বেশী করা :-
আল্লাহ স্বীয় নবীকে বলেন, ‘আর রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদের ছালাত আদায় করবে। এটি তোমার জন্য অতিরিক্ত। নিঃসন্দেহে তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রশংসিত স্থানে উঠাবেন’ (ইসরা ১৭/৭৯)। শুধু তাই নয়, তাঁর সাথীরাও একইভাবে নফল ইবাদত করতেন (মুযযাম্মিল ৭৩/২০)।
যেকোন অবস্থায় কুরআন হ’ল মুমিনের জন্য শিফা বা আরোগ্য (ইসরা ১৭/৮২)। তিনি বলেন, ‘তবে কি তারা কুরআন অনুধাবন করে না? নাকি তাদের হৃদয়গুলি তালাবদ্ধ?’ (মুহাম্মাদ ৪৭/২৪)।
সময় জার্নাল/ইএইচ