শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, প্রতিবাদে ফের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫
রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল, প্রতিবাদে ফের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাফি উজ্জামান, রাবি প্রতিনিধি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ভর্তিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে জুম'আর নামাজ শেষে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এসে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।

এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন’, ‘ভিক্ষা কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন’, ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে পোষ্য কোটার কবর দে’, আলি রায়হান মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ, প্রভৃতি স্লোগান দেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘পোষ্য কোটা একটা মীমাংসিত ইস্যু। যাকে কোনো ভাবেই ফিরিয়ে আনা চলবে না। আমরা রক্ত দেবো, কিন্তু এই ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটা ফিরতে দিবো না। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ক্যাম্পাসে যখন রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে, সেই সময়ে এসে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরি করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র কখনো বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না।’ 

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন আনদোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে পোষ্য কোটার কবর রচনা করেছিলাম। গতকাল দেখলাম কবর থেকে আবার তা উঠিয়ে আনা হয়েছে। পোষ্য কোটা একটা মীমাংসিত ইস্যু। যাকে কোনো ভাবেই ফিরিয়ে আনা চলবে না। স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছি, শিক্ষার্থীরা এই অযৌক্তিক কোটার বিরুদ্ধে আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে কবর রচনা কবে।’

রাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ক্যাম্পাসে যখন রাকসু নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে, সেই সময়ে এসে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরি করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র কখনো বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মাহির ফয়সাল বলেন, ‘আপনারা যদি রক্ত চান, আমরা রক্ত দিতে রাজি আছি। এই রক্ত দিয়ে গোসল করবেন, নাকি পিপাসা মেটাবেন? আমাদের রক্ত অনেক আছে। আমরা রক্ত দেবো, কিন্তু এই ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটা ফিরতে দিবো না।’

আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুল হাসান সজীব বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু নির্বাচন চায় না। যেহেতু তারা চায় না, তাই রাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নির্বাচনের অল্পকিছু আগ মুহুর্তে এই পোষ্য কোটার ইস্যুটাকে জ্বলন্ত করে নিয়ে এসেছে।’

এর আগে, গত ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পোষ্য কোটা বাতিল ঘোষণা করেন উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পোষ্য কোটা থাকবে না বলে তিনি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, আমি ১ শতাংশ পোষ্য কোটা রাখারও পক্ষে নই। আমি অঙ্গীকার করছি, এই পোষ্য কোটা রাখা হবে না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষেই এটি বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি বাতিল ঘোষণা করা হবে।’

এরপর পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রশাসনের আশ্বাসে তাঁরা কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন। সর্বশেষ গত বুধবার পোষ্য কোটা পুনর্বহালসহ তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। দাবি না মানলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তৎক্ষনাৎ প্রতিবাদ জানিয়ে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে প্রায় ৪ঘন্টা বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শুক্রবার বাদ জুম'আ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন শিক্ষার্থীরা।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল