আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন শান্তি পরিকল্পনার আওতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি পরবর্তী অন্তর্বর্তী প্রশাসন পরিচালনায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা নিতে পারেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।
ব্রিটিশ গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে শুক্রবার এ কথা বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন এবং অন্যান্যদের সঙ্গে গাজায় যুদ্ধ পরবর্তী এই প্রশাসন নিয়ে টনি ব্লেয়ারের আলোচনার পর এ খবর এসেছে।
বিবিসি এবং ‘দ্য ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিন’ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী, জাতিসংঘ ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সমর্থনের ভিত্তিতে ‘গাজা ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজিশনাল অথরিটি’র (গিটা) নেতৃত্ব দিতে পারেন ব্লেয়ার।
৫ বছরের জন্য গাজার ‘সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ও আইনি কর্তৃপক্ষ’ হিসাবে থাকার জন্য এই প্রশাসন জাতিসংঘের ম্যান্ডেট অন্বেষণ করবে। পরে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়া হবে ফিলিস্তিনিদের হাতে।
বলা হচ্ছে, এ পরিকল্পনায় হোয়াইট হাউজের সমর্থন আছে। তবে টনি ব্লেয়ারের কার্যালয় বলেছে, তিনি এমন কোনও পদক্ষেপ সমর্থন করবেন না, যা গাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করবে।
যুক্তরাজ্যকে ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন টনি ব্লেয়ার। তিনি গাজার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে এরই মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে করেছেন।
গত অগাস্টে হোয়াইট হাউজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন টনি ব্লেয়ার। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে গাজা পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ওই বৈঠকে বিস্তৃত পরিসরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা জানান। তবে বৈঠক সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু তিনি প্রকাশ করেননি।
এই পরিকল্পনাটি হবে পূর্ব তিমুর এবং কসোভোর রাষ্ট্রে রূপান্তর পক্রিয়া তদারককারী আন্তর্জাতিক প্রশাসনের আদলে, সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে।
গাজার অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ সীমান্তের কাছে মিশরে স্থাপিত হবে। পরে গাজায় স্থিতিশীলতা আসলে এই কর্তৃপক্ষ মূল ভূখন্ডে স্থানান্তরিত হবে। এর সঙ্গে যোগ দিতে পারে একটি বহুজাতিক বাহিনীও।
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ২০০৭ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর কয়েক বছর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), রাশিয়া ও জাতিসংঘের পক্ষে মধ্যপ্রাচ্য দূত হিসেবে কাজ করেছিলেন।
তার লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা।
গাজার অন্তর্বর্তী প্রশাসন নিয়ে আলোচনায় ব্লেয়ারের সম্পৃক্ততার খবর এমন সময়ে এল, যখন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন, তিনি দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ট্রাম্পসহ অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ভবিষ্যতে গাজার শাসনব্যবস্থায় হামাসের কোনও ভূমিকা থাকবে না এবং গোষ্ঠীটিকে নিরস্ত্র হতে হবে।
এমআই