এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আজ। সকাল থেকেই মন্দিরে মন্দিরে চলছে পুরোহিতের মন্ত উচ্চারণ, ঢাকের ধনী, উলুধ্বনি ও শঙ্খের ধ্বনিতে মুখরিত মন্দির প্রাঙ্গণ। ধূপধুনচি, পঞ্চপ্রদীপ আর ঢাকের বাদ্যের তালে আসনে অধিষ্ঠিত হবেন দেবী দুর্গা। বোধনের ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়েই দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ষষ্ঠীতে দুর্গা দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস সম্পন্ন হবে। আজ সকালে বেলগাছ তলে (বিল্ববৃক্ষের নিচে) দেবীর আবাহন, সংকল্প এবং ‘ত্রিনয়নী’ দুর্গা দেবীর নিদ্রা ভাঙিয়ে পূজার্চনার মাধ্যমে তাকে বরণ করা হবে। সকালেই কল্পারম্ভ, বিহিত পূজা ও ষষ্ঠী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বছর দেবী দুর্গা এসেছেন গজে (হাতি) চড়ে। গজে আগমনের অর্থ শান্তি, সমৃদ্ধি ও শস্য-শ্যামলার প্রতীক। পূজা শেষে দেবীর প্রস্থান হবে দোলায় (পালকি) চড়ে, যা মহামারী বা মড়কের ইঙ্গিত বহন করে। আগামীকাল মহাসপ্তমীর দিন থেকে শুরু হবে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
মহাচণ্ডী’র উল্লেখ রয়েছে, ত্রেতাযুগে ভগবান রামচন্দ্র রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন। শক্তি বৃদ্ধির আশায় শরৎকালে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন। এরপর তিনি যুদ্ধে জয়লাভ করে রাবণকে পরাজিত করে স্ত্রী সীতাকে উদ্ধার করেন। সেই থেকে প্রতিবছর শরৎকালে দুর্গোৎসব পালিত হয়ে আসছে। শাস্ত্রকারদের মতে, দেবী দুর্গা তার ভক্তদের দুঃখ, ভয়, শোক ও যন্ত্রণা থেকে রক্ষা করেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার দিনে দেবীপক্ষ শুরু হয়। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুসারে, ১২ আশ্বিন (২৯ সেপ্টেম্বর) মহাসপ্তমী, ১৩ আশ্বিন (৩০ সেপ্টেম্বর) মহাষ্টমী, ১৪ আশ্বিন (১ অক্টোবর) মহানবমী এবং ১৫ আশ্বিন (২ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। দেবীর সঙ্গে এই কয়েক দিন পূজিত হবেন তার সন্তান গণেশ, লক্ষ্মী, কার্তিক ও সরস্বতী।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ফরিদপুরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং প্রতিটি মন্দিরে সিসিটিভির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল জানিয়েছেন। এবছর ফরিদপুরে ৭৫৭ টি দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
একে