নিজস্ব প্রতিবেদক:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক এবং এই মামলার সর্বশেষ সাক্ষী মো. আলমগীর। এ সময় সরাসরি সম্প্রচারিত বিচারকাজে ট্রাইব্যুনালের সম্মতি নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন ঘটনার ১৭টি ভিডিও দেখানো হয়।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আলমগীর জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আলমগীর এই মামলার ৫৪তম সাক্ষী। তিনি জবানবন্দির শুরুতে নিজের পরিচয় দেন। তারপরই প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, জবানবন্দির সময় কিছু ভিডিও দেখানোর প্রয়োজন হবে। সেসব ভিডিও একসঙ্গে শুরুতেই দেখাতে চান। ট্রাইব্যুনাল তাতে সম্মতি জানান। এরপর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময়ের বিভিন্ন ঘটনার ১৭টি ভিডিও দেখানো হয়।
এর আগে শনিবার প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম জানান, শেখ হাসিনার মামলার সর্বশেষ ও ৫৪তম সাক্ষী হিসেবে তদন্তকারী কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেবেন। তার জবানবন্দির অংশবিশেষ ও জব্দকৃত ভিডিও প্রদর্শনী সরাসরি সম্পচার করা হবে।
গত বুধবার ৫৩তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন এ মামলার বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। তিনি জানান, শেখ হাসিনার ফোনালাপের ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং ৩টি মোবাইল নম্বরের সিডিআর জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ফোনালাপ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ৫৩তম সাক্ষী উপস্থাপনের সময় বাজিয়ে শোনানো হয়েছে। যেটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন তদন্ত সংস্থার উপ-পরিচালক মো. জানে আলম খান। পরে তদন্ত করেন উপ-পরিচালক মো. আলমগীর। সার্বিক সহযোগিতা করেছিলেন বিশেষ তদন্তকারী কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।
এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তী সময়ে ৩১ মে সম্পূরক অভিযোগ দেওয়া হয়। ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। গত ১০ জুলাই এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে সাবেক আইজিপি মামুন নিজেকে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হিসেবে যে আবেদন করেছেন, তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল। বর্তমানে সাবেক আইজিপি মামলার আসামি হলেও রাজসাক্ষীর মর্যাদায় কারাগারে রয়েছেন।
এমআই