সময় জার্নাল প্রতিবেদক:
তলদেশে থাকা খনিজ সম্পদ, প্রায় পঞ্চাশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিশাল মৎস্যসম্পদ, সী ক্রুজিং ও সমুদ্র কেন্দ্রিক বিজনেস হাবসহ বঙ্গোপসাগর অপার সম্ভাবনার ব্লু ইকোনমির ভান্ডার। পর্যাপ্ত রিসার্চ, সঠিক পরিকল্পনা করে আগাতে পারলে দেশে এক অন্যন্য অগ্রগতি ঘটবে। এই ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে জানিয়েছেন অর্থনীতিবীদ ও এনবিইআর চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ। আজ শেষ পর্ব।
ব্লু ইকনোমির জন্য দক্ষ জনবল তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও টেকনিক্যাল ইনিস্টিউটের ভূমিকা কী হওয়া উচিৎ জানতে চাইলে অধ্যাপক পারভেজ বলেন, আমাদের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সাইন্স অথবা যেগুলো আছে এরা এখনো ফোকাসড কিন্তু মেরিন রিসোর্স নিয়ে। ব্লু ইকোনোমি নিয়ে ওনাদের কাজ করতে মেইন অসুবিধা হচ্ছে। ব্লু ইকোনোমির জন্য অনেক রিসার্চ ভ্যাসেল লাগে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তো সরকার সেই সহযোগিতা দিচ্ছে না। আমাদের যথেষ্ট রিসোর্স আছে, মানবসম্পদ আছে। কিন্তু আমরা কাজে লাগাতে পারতেছিনা।
আপনার মাধ্যমে উপাচার্যদের বলবো আপনাদের নিজের চেয়ার ঠিক থাকুক। কিন্তু সরকারের কাছে নিজ নিজ ইউনিভার্সিটির জন্য রিসার্চ করার জন্য জোর দাবি তুলেন।
আর একটি বিষয় যেটা আমাদের এখানে সমস্যা সেটা হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা। সেটা হচ্ছে ধরেন, মালয়শিয়াতে আপনি জানেন রাস্তাঘাটগুলো সব আউটসোর্স করে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের এখানে ব্লু ইকনোমিকে চল্লিশ বছর ধরা হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড সিনারিও উইল চেইঞ্জ, এআই উইল টোটালি ক্যাপচার ওয়ার্ল্ড। তো ঐ সময় আর ব্লু ইকোনমির প্রয়োজন হবে না। স্কাই ইকনোমি হবে এটা ভাবার মতো লোক আমাদের নেই। তাই আমাদেরকে আমি মনে করি ম্যাক্সিমাম ফিফটিন ইয়ার্স প্ল্যান। এটাকে তিন ভাগে ভাগ করতে হবে। ফাস্ট ফেইজে আমাদেরকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরকে নিয়ে আসতে হবে। পানির উপরের টাইডাল ফোর্স, তারপরে ফিশ। তারপর কয়েকশ মাইল দূরে আপনার বিদেশে সী ক্রুজিং করে। চিটাগং বোট ক্লাব থেকে জাহাজে করে আধা মাইল যেতে রাজি থাকলে আমাদের এটা এক লক্ষ আঠারো হাজার আটশ ছেষট্টি কিলোমিটার। তার মানে এইটাকে ঘিরে কত ট্যুরিস্ট, কত শিপ, ক্রুজিং করা যায়। এটার জন্য কী কিছু লাগে? কল্পনাই করতে পারেনা! সিভিসি যেরকম ওয়েস্টার্ন মেরিনকে বলেছে, তোমরা এটা করো। আমি দায়িত্বে থাকলে আমি আগামী কালকে অন্তত দশটি ক্রুজ কোম্পানিকে বলতাম, তোমরা এলাকা ভাগ করে এটা কালকেই শুরু করো। দুর্ভাগ্য আমার।
সমুদ্র সম্পদ গবেষণায় বাজেট পর্যাপ্ত কিনা এবিষয়ে তিনি বলেন, মারাত্মক অপ্রতুল। আরেকটা বিষয় আছে। সেটা হচ্ছে এটার জন্য একটা অথোরিটি আছে। আমি মনে করি সেই অথরিটিতে যারা যারা ব্লু ইকোনমিকে ডেভলাপ করেছে সেই সমস্ত দেশ থেকে রিটায়ার্ড এক্সপার্ট এনে আইডিয়া জেনারেশন করাটা অতি দ্রুত জরুরি।
বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তায় কি করণীয় জানতে চাইলে অধ্যাপক পারভেজ বলেন, বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তা বিশাল চ্যালেঞ্জ থাকতে পারত। কিন্তু আমাদের বঙ্গোপসাগরের আশেপাশে শক্তিশালী দেশ নেই। বার্মায় এখন মারামারি করে। আরাকান আর্মি এরা আমাদের সাথে পারবে না। বার্মিজ নেভি ইউনিক স্ট্রং হওয়ার কারণে। ইউর এনিমি ইজ মাই ফ্রেন্ড। ভারতও এখানে বেশি কিছু করবে না। তাহলে চায়না সেই সুযোগ নিবে। তাই আমরা এখানে একটা স্থিতি অবস্থা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু আমাদের এত বড় সমুদ্র এটার জন্য এটা শঙ্কার মুখে আছে। কিন্তু আল্লাহ আমাদের সহায় যে পরিস্থিতি আমাদের পক্ষে আছে।
এমআই