শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫

শান্তিতে নোবেলজয়ী মারিয়া কানারো মাচাদোর ‘কালো দিক’

শনিবার, অক্টোবর ১১, ২০২৫
শান্তিতে নোবেলজয়ী মারিয়া কানারো মাচাদোর ‘কালো দিক’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন ভেনেজুয়েলার সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী মারিয়া কানারো মাচাদো। গতকাল শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে নরওয়ের নোবেল কমিটি।

তিনি নোবেল পাওয়ার পর ‘কোডপিংকের’ লাতিন আমেরিকা ক্যাম্পেইন কর্ডিনেটর ও জন্মসূত্রে ভেনেজুয়েলার নাগরিক মিচেলে এলনার ‘কমন ড্রিমসে’ একটি মতামত কলাম লিখেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘মারিয়ার মতো ডানপন্থিরা যখন নোবেল শান্তি পুরস্কার জেতে তখন শান্তির আসলে কোনো অর্থ হয় না।’

‘গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী’ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচয় পাওয়া মারিয়া কানারো মাচাদো এখন পর্যন্ত কি কি করেছেন। সেগুলোর একটি তালিকা দিয়েছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছেন—

  • মারিয়া ২০০২ সালের ভেনেজুয়েলার সামরিক অভ্যুত্থানে সহায়তা করেছিলেন। যেটি স্বল্প সময়ের জন্য একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করেছিল। এছাড়া তিনি কারামোনা ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। যেটি রাতারাতি ভেনেজুয়েলার সংবিধান এবং সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিলুপ্তি ঘটিয়েছিল।

  • ভেনেজুয়েলর সরকার উৎখাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন। নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে ভেনেজুয়েলাকে ‘স্বাধীন’ করতে বিদেশি সেনাদের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।

  • মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েকদিন আগে ভেনেজুয়েলায় হামলার হুমকি দিয়েছিলেন। যেটিকে উৎফুল্লভাবে সমর্থন জানিয়েছিলেন মারিয়া। এছাড়া ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ‘মাদক কারবারিদের’ রুখতে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েনকে সমর্থন করেছেন তিনি। মারিয়া বলেছেন তিনি ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান।

  • ভেনেজুয়েলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিয়েছেন মারিয়া মাচাদো। যদিও তিনি জানেন এ নিষেধাজ্ঞার ফল ভোগ করবে গরীব, অসুস্থ ও কর্মজীবী মানুষরা।

  • এছাড়া ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় কথিত ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ গঠন করেছিলেন তিনি। যেই সরকারের প্রেসিডেন্ট নিজেই নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছিলেন।

  • মারিয়া কারিনো মাচাদো জানিয়েছেন, কখনো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হলে তিনি দেশটির ইসরায়েলি দূতাবাস ফিলিস্তিনের দখলকৃত জেরুজালেমে স্থানান্তর করবেন। তিনি দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করেছেন। যে ইসরায়েল নিজেই একটি বর্ণবাদী সরকার। তারা আত্মরক্ষার অজুহাতে গাজায় নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে। যা থেকে হাসপাতালও বাদ যায়নি।

  • আর এখন তিনি ভেনেজুয়েলার তেল, পানি এবং অবকাঠামো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন। ১৯৯০ সালের দিকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে লাতিন আমেরিকার বেশিরভাগ দেশের পরিস্থিতি শুধু খারাপই হয়েছিল।

  • এছাড়া ২০১৪ সালে ভেনেজুয়েলাজুড়ে ‘লা সালিদা’ নামে একটি আন্দোলন শুরু করেন। বিশ্বব্যাপী এটি শান্তিপ্রিয় হিসেবে দেখালেও; আন্দোলনটি ছিল সহিংস।

ইসরায়েলের প্রকাশ্য সমর্থক এবং নেতানিয়াহুর ভক্ত

জর্ডানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রোয়া নিউজ জানিয়েছে, শান্তিতে নোবেল জয়ের পর মারিয়ার একটি সাক্ষাৎকার ভাইরাল হয়েছে। যেটি তিনি এক ইসরায়েলি টিভিকে দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন, “আমি বিশ্বাস করি এবং আমি ঘোষণা দিচ্ছি, ইসরায়েলের সমর্থনে আমাদের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করা হবে।”

এছাড়া ২০১৮ সালে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কাছে একটি চিঠি লেখেন তিনি। যেখানে ভেনেজুয়েলায় নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে উৎখাত করতে ইসরায়েলকে সামরিক হামলা চালানোর আহ্বান জানান তিনি।

এছাড়া গাজায় ইসরায়েল যে বর্বরতা চালিয়েছে সেটির পক্ষে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেছিলেন মারিয়া।

নোবেল জয়ের পর মারিয়া তার পুরস্কার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে উৎস্বর্গ করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মারিয়ার বেশ সুসম্পর্ক রয়েছে। যিনি আত্মগোপনে থেকে ভেনেজুয়েলার সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশি সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মারিয়াকে তিনি বলেছিলেন, “মারিয়া হলেন স্থিতিস্থাপকতা, দৃঢ়তা এবং দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক।”

২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর মারিয়াকে গ্রেপ্তার করেছিল ভেনেজুয়েলার সরকার। ওই সময় ট্রাম্প নিজে তার মুক্তির জন্য সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন।

সূত্র: কমন ড্রিমস, রোয়া নিউজ, বিবিসি

একে 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল