নিজস্ব প্রতিবেদক:
মির্জাখীল দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন হযরত শাহ জাঁহাগীর তাজুল আরেফীন মৌলানা সৈয়দ মোহাম্মদ আরেফুল হাই সাহেবে গত ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ইং শেষ নিস্বাস ত্যাগ করেন। তার ওফাতের মাধ্যমে তরিকতের এক গৌরবময় যুগের অবসান ঘটলো। তিনি এমন এক আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব, যিনি ইসলামের মর্মবাণীকে শুধু কথায় নয়, কর্মে ও মানবসেবায় রুপদান করেছিলেন।
২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের সাতকানিয়া মির্জাখীল দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় যা পরিচালনা করেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র ও উত্তরসূরি হযরত ড. মৌলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান।
দুই শতাব্দীরও অধিককাল ধরে মির্জাখীল দরবার শরীফ কুরআন, সুন্নাহ ও শরীয়াত ও তরিকতভিত্তিক মানবসেবার প্রধান মারকাজ হিসেবে সুপরিচিত। তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন নিপীড়িত মানুষের মুক্তি, অশিক্ষিতের শিক্ষালাভ এবং আশ্রয়হীন মানুষের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
তাঁর নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মানবিক উদ্যোগ - বিদ্যালয়, হাসপাতাল, সেচব্যবস্থা, সড়ক ও জনকল্যাণমূলক প্রকল্প-যেগুলো লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে আলো ছড়িয়েছে।
তাঁর নেতৃত্বের মূলে ছিল নিঃস্বার্থ সেবা, করুণা ও মানবতার প্রতি ভালোবাসা। তিনি বিশ্বাস করতেন, আল্লাহর প্রতি ভক্তি তখনই পূর্ণ হয়, যখন তা সৃষ্টি জগতের সেবার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও গ্রামীণ উন্নয়নে তাঁর কর্মযজ্ঞ প্রমাণ করেছে যে ধর্ম ও উন্নয়ন কখনো বিচ্ছিন্ন নয় - বরং একে অপরের পরিপূরক।
পূর্বসূরী আউলিয়াগণের রূহানিয়াত ও সিলসিলার আলোকধারায় তাঁর আত্মা ছিল গভীরভাবে সংযুক্ত। তাঁর শিক্ষা মানুষকে শিখিয়েছে - আধ্যাত্মিকতা মানে শুধু ধ্যান নয়, বরং কর্ম, করুণা ও কল্যাণের এক অখণ্ড জীবনপথ।
বাংলাদেশ আজ শোকাহত - একজন এমন সাধককে হারিয়ে, যিনি ইসলামের সৌন্দর্যকে মানবসেবার মাধ্যমে দৃশ্যমান করেছিলেন। তাঁর রেখে যাওয়া ঐতিহ্য বেঁচে থাকবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে, প্রতিটি অন্নপ্রাপ্ত ক্ষুধার্ত হৃদয়ে, আর প্রতিটি সেই মানবমনে - যেখানে তাঁর দয়ামায়া ও ভালোবাসার ছোঁয়া পৌঁছেছে।
এমআই