এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরে এক গৃহবধূর ওপর পিস্তল ঠেকিয়ে কানের দুল ছিনতাইয়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনার মূল আসামি, কুখ্যাত অপরাধী মোঃ শরীফুল ইসলাম ওরফে ডন শরীফ অবশেষে ধরা পড়েছে র্যাবের হাতে। তার সহযোগী মোঃ রায়হান মোল্লা-কেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ডাকাতি, খুন, চুরি ও মাদকসহ ডন শরীফের বিরুদ্ধে রয়েছে মোট দশটি মামলা। র্যাব তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত নকল পিস্তল, চোরাই মোটরসাইকেল এবং বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় র্যাব-১০ এর পক্ষ থেকে ফরিদপুরের গোয়ালচামোট কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন এডিশনাল ডিআইজি ও র্যাব - ১০ এর অধিনায়ক মো কামরুজ্জামান।
তিনি জানান, গত ২১ অক্টোবর, ভোর আনুমানিক ৬টার দিকে ফরিদপুর শহরের উত্তর শোভারামপুর এলাকায় গৃহবধূ মঞ্জু রানী দাসকে মোটরসাইকেলে আসা দুই ছিনতাইকারী পিস্তল ঠেকিয়ে তার কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। এই পুরো ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ হয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছিল।
তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, প্রযুক্তিগত নজরদারি ও নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে র্যাব-১০, সিপিসি–৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের চৌকস দলটি আসামিদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ফরিদপুর জেলার সালথা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল আসামি ডন শরীফ ও তার সহযোগী রায়হান মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১.৫ ( দেড়) কেজি গাঁজা, ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল, ধারালো সুইচ গিয়ার এবং ক্ষুর উদ্ধার করা হয়। এছাড়া, পাবনা থেকে চুরি করা একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়েছে, যা তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগের জন্য ব্যবহার করত।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে যে তারা দীর্ঘদিন ধরে ভোরবেলা বা গভীর রাতে পথচারীদের টার্গেট করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করত এবং মাদক কেনা-বেচার সঙ্গেও জড়িত ছিল।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, গ্রেফতার হওয়া ডন শরীফ কেবল ছিনতাইকারী নয়, সে ২০১৮ সালে ফরিদপুরের স্টাফ নার্স অরুনিমা ভৌমিক হত্যা মামলারও প্রধান আসামি ছিল। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, খুন ও চুরির মতো একাধিক গুরুতর অপরাধে মোট ১০টি মামলা রয়েছে।
আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আসামিদের ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
এমআই