নুসরাত নাঈম সাজিয়া, রাজশাহী কলেজ:
রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে এক ছাত্রদল কর্মীর বিরুদ্ধে গাঁজা সেবনের অভিযোগ উঠেছে। একইসময় দুইজন বহিরাগতকেও তার সাথে পাওয়া গেছে। তবে তাদের পরিচয় জানা যায় নি।
শনিবার (১ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে ছাত্রাবাসের বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ ভবনের (ই -ব্লক) ১০১ নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মীর নাম মোহাম্মদ রাব্বি শেখ। তিনি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়াও রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শনিবার রাত ৮টার দিকে ই- ব্লকের আবাসিক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাব্বি শেখ দুইজন বহিরাগত সহ নিজ রুমে গাঁজা সেবন করেন। একই ভবনের কয়েকজন শিক্ষার্থী রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় অস্বাভাবিক গন্ধ পেয়ে অন্যদের ডেকে আনেন। পরে গাঁজা সেবনের বিষয়ে জানতে চাইলে রাব্বি শেখ সত্যতা স্বীকার করেন।
রাব্বির রুমমেট মো. হাফিজ বলেন, “আমি রুমে ওঠার পর থেকে রাব্বি নিয়মিত অতিথি আনে। তারা নিয়মিত সিগারেট সেবন করে। আজও বাইরে থেকে ঢুকতেই স্পষ্টভাবে গাঁজার গন্ধ টের পাই।”
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্লকের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, যেহেতু রুমটা ওয়াশরুমের পাশেই অবস্থিত। আমাদের প্রত্যেকেরই ওই রুমের সামনে দিয়ে ওয়াশরুমে যেতে হয়। আমরা কয়েকজন ওয়াশরুমে যাওয়ার সময় এই গন্ধটা পেয়েছি এবং সবাই বুঝতে পেরেছি এটা গাঁজার গন্ধ। আমরা আরও কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে কোন উত্তর দিতে পারে নি।
বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ হলের মনিটর ইমরান মাহমুদুল বলেন, আমি ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারি এবং রাব্বির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। তবে সে পরে বিষয়টি জানাবে বলেছে। হোস্টেলের প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, ‘ওই কক্ষে সত্যিই গাঁজা সেবন করা হচ্ছিল।’ প্রশাসনের কাছে আমরা এর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাব।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাব্বি বলেন, আমার রুমে গেস্ট আসে সবসময়। আমি নিজে কখনও একটা সিগারেটও খাই না।আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আর গাঁজার গন্ধ আসতেই পারে, এটার ভিত্তিতে তো নিউজ করতে পারেন না। আর আমার রুমে তো কোনো গাঁজা পাওয়া যায়নি। তাহলে গন্ধের ভিত্তিতে কাউকে এমন অভিযোগ দেওয়া ঠিক না।
কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ছাত্রাবাসের সুপার ড. মো. আবুল মজন চৌধুরী বলেন, আমি ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। ইতিমধ্যে লোক পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল (রোববার) ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে বসবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও বলেন, নাম শুনে ছেলেটিকে চিনতে পেরেছি। সে নিয়মিত বেয়াদবি করে এবং পূর্বে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ছিল বলে মনে হয়। সম্প্রতি নতুন করে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়েছে।
জানতে চাইলে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবীর বলেন, “ছাত্রাবাসে মাদক সেবন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি রাব্বি এই কাজ করে থাকে, তার সিট বাতিল করা উচিত। আমরা প্রশাসনের প্রতি আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এমআই