নিজস্ব প্রতিবেদক:
সুদানে সরকারি বাহিনী ও আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে চলমান সংঘাত দারফুর থেকে পূর্ব দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে দারফুরের পূর্বে অবস্থিত কোরদোফান অঞ্চলের বিভিন্ন শহর ও গ্রাম থেকে অন্তত ৩৬ হাজারের বেশি সাধারণ মানুষ বাস্তচ্যুত হয়ে পালিয়ে গেছেন।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৬ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে উত্তর কোরদোফানের পাঁচটি এলাকায় মোট ৩৬ হাজার ৮২৫ জন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সংঘাতের কেন্দ্রীয় এলাকা এখন উত্তর কোরদোফান, যা পশ্চিমের দারফুর অঞ্চলকে পূর্বদিকের রাজধানী খার্তুমের সঙ্গে যুক্ত করে। এ অঞ্চলটি সামরিকভাবে অত্যন্ত কৌশলগত– দারফুর ও নদীঘেঁষা খার্তুম অঞ্চলের মধ্যে এক ধরনের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে এটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কোরদোফানের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে সেনা ও আরএসএফ– দুপক্ষই ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান জোরদার করেছে। এদিকে উত্তর কোরদোফান রাজ্যের রাজধানী এল-উবেইদ শহরটি এখন দুপক্ষের সংঘর্ষের মূল কেন্দ্রবিন্দু। এই শহর দারফুরের সঙ্গে খার্তুমকে সংযুক্ত করে এবং এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি ও সামরিক সরবরাহকেন্দ্র রয়েছে। রোববার এল-উবেইদের উত্তরে অবস্থিত বারা শহরটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে আরএসএফ। 
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এই সংঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। হাজার হাজার পরিবার সব হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাচ্ছেন। স্থানীয় এক কৃষক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা আর মাঠে কাজ করতে যাই না। কখন কোথায় লড়াই শুরু হবে, বলা যায় না।’
এদিকে, জাতিসংঘের আফ্রিকাবিষয়ক সহকারী মহাসচিব মার্থা পোবি সতর্ক করে বলেছেন, বারা ও আশপাশের এলাকায় ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ এবং জাতিগত প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কা বাড়ছে। তিনি সংঘাতের দুপক্ষকে মানবিক করিডোর খোলার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে জরুরি সহায়তা ও ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হয়।
জাতিসংঘের মতে, ২০২৩ সালের এপ্রিলে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে সুদানে এরই মধ্যে এক কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
একে