বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্যের দায়ে শেকৃবি শিক্ষার্থী ধনীশ্রী রায়কে বহিষ্কার

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৬, ২০২৫
ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্যের দায়ে শেকৃবি শিক্ষার্থী ধনীশ্রী রায়কে বহিষ্কার

মোঃ রানা ইসলাম, শেকৃবি প্রতিনিধি:

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতমূলক ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ধনীশ্রী রায়কে এক সেমিস্টার বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আজ বৃহস্পতিবার( ৬ নভেম্বর) রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, গত ২৪ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে শিক্ষার্থী ধনীশ্রী রায় তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্য/পোস্ট প্রদান করেন। তদন্ত কমিটির সুপারিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে এবং চলমান (জুলাই-ডিসেম্বর/২৫) সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।

ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ধনীশ্রী রায়ের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট শেয়ার ও তাতে মন্তব্য করার মাধ্যমে, যেখানে মুসলিম সমাজ, মাদরাসা শিক্ষার্থী এবং হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায় সম্পর্কিত নানা কটূক্তিমূলক ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়া হয়। তার সেই মন্তব্যে তিনি বলেছিলেন— “ হুজুররা ছেলে বাচ্চাগুলোর পায়ুপথ দেখে বেড়ায়, সে বেলায় কোনো প্রতিবাদ নাই।নিজের ধর্মের লোক তাই না? করলে তাতে দোষ নাই। দোষ কেবল হিন্দু হলে। হিন্দু হলে তার জন্য আইন হয় সোচ্চার আর এক্টিভ! কনভার্টড হিন্দু হলে সাধুবাদ দেয়, জান্নাতি রা। অথচ ওই কনভার্টেড মুসলিম যখন সব জেনে জ্ঞানে,-সজ্ঞানে তাদের কোনো পরিপন্থী কাজ করে, তখনও সে হিন্দু বলে বিবেচিত এবং শাস্তি চায়, আর কিছু হলেই সস্তা আলাপ বয়কট, জবাই আরও বালছাল। তখন তাদের নিজের পাছার গুও দেখে না। মেইন প্রবলেম এরা না বুঝেই লাফাচ্ছে জোড়ে সোড়ে। পুরা এক বাস্টার্ড জেনারেশন এটাকে অন্ধের মত ফলো করে আর মুখুলে বিদ্বেষী বলে। এসব এখন ঘরে-ঘরে ট্রেনিং পাপ্ত ডিসকাশন। আমরা অন্ধ না, চোখ-কান খোলাই থাকে।
আসলে ওদের সমস্যাই হলো এই বাংলাদেশের ৩ কোটি হিন্দু নিয়ে। নির্লজ্জের দল। এখন নাটক চলতেছে, কারণ সনাতনীদের বাড়ি ঘর প্রতিমা ভাঙ্গার সিজন শেষ। কাজ নাটকে মেরুদন্ডহীন কাপুরুষেরা স্যাটা তুলে লাফাচ্ছে।শেইম।"

মন্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

এরপর ২৫ অক্টোবর শনিবার রাত ১০টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেট থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে উপাচার্যের বাংলোর সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর কঠোর শাস্তির দাবি জানায় এবং স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা জানান, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এমন ঘৃণাবাচক ও ধর্ম অবমাননাকর মন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, যা কোনোভাবেই সহনীয় নয়।

শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের পরপর তাদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রমাণ পায়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শৃঙ্খলা বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয় তাকে শাস্তি প্রদান করার। পরে উপাচার্যের অনুমোদনক্রমে অফিস আদেশ জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, কোনো শিক্ষার্থী যদি ধর্মীয় উস্কানিমূলক, কুরুচিপূর্ণ বা অন্যের অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শেকৃবি প্রশাসন মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানের চর্চা ও সহনশীলতার জায়গা— ধর্ম, সংস্কৃতি ও মানবিক মূল্যবোধে আঘাত সৃষ্টিকারী কোনো কাজই সেখানে সহ্য করা হবে না।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল