বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর পরিচয় প্রকাশ নয়

সোমবার, মার্চ ৮, ২০২১
ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর পরিচয় প্রকাশ নয়

সময় জার্নাল প্রতিবেদক :  ​ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর ছবি বা পরিচয় প্রকাশ না করতে বলেছেন হাইকোর্ট। এখন থেকে কোনো গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের ছবি বা পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না মর্মে আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন। আদালত বলেছে, ভিকটিমের ছবি বা পরিচয় প্রকাশ অমানবিক।

এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় সংবাদ মাধ্যমে নির্যাতিতা নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বাধা-নিষেধের কথা বলা হয়েছে। এই ধারা কার্যকরে সরকার কি পদক্ষেপ নিয়েছে সেই ব্যাপারে প্রতিবেদন চেয়েছে হাইকোর্ট। আগামী এক মাসের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য সচিব, আইন সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ও প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যানকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ঢাকার কলাবাগানে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন এক কিশোরী। ওই ঘটনায় কিশোরীর নাম, পরিচয় ও ছবি বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রকাশ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণের শিকার মৃত নারী ও শিশুর পরিচয় ও ছবি হরহামেশাই মিডিয়ায় প্রচার ও প্রকাশ করা হয় উল্লেখ করে হাইকোর্টে এ রিট করেন বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন।

শুনানিতে তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় ভিকটিমের ছবি ও পরিচয় প্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু আইনের এই বিধান উপেক্ষা করেই ভিকটিমের ছবি ও পরিচয় হরহামেশা প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে ভিকটিম ও তার পরিবার সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছে। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের পাশাপাশি রুল জারি করে। রুলে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১৪ ধারার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিচারাধীন মামলায় ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুকে দোষী সাব্যস্ত বা চরিত্র হনন করে কোনো বক্তব্য প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।

শুনানিতে মাহফুজুর রহমান মিলনকে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার আইমান খান। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪(১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনে বর্ণিত অপরাধের শিকার হয়েছেন এইরূপ নারী বা শিশুর ব্যাপারে সংঘটিত অপরাধ বা তৎসম্পর্কিত আইনগত কার্যধারার সংবাদ বা তথ্য বা নাম-ঠিকানা বা অন্যবিধ তথ্য কোনো সংবাদপত্রে বা অন্য কোনো সংবাদ মাধ্যমে এমনভাবে প্রকাশ বা পরিবেশন করা যাবে যাতে উক্ত নারী বা শিশুর পরিচয় প্রকাশ না পায় । (২) উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করা হলে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকে অনধিক দুই বৎসর কারাদণ্ডে বা অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

২০১৯ সালে এক রায়ে আদালতে বিচারাধীন কোনো মামলার শিশু আসামির ছবিসহ তার পরিচিতি গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করা যাবে না বলে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিচারের আগে, বিচার চলাকালে এবং বিচারের পর সংশ্লিষ্ট শিশু সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। শিশুর পরিচয় প্রকাশ পায় বা তাকে চিহ্নিত করা যায়-এমন কোনো তথ্য দেওয়া যাবে না বলে ওই রায়ে বলা হয়। আদালতের রায়ে বলা হয়, প্রতিবেদনে শিশুকে অপরাধী, আসামি, সাজাপ্রাপ্ত এসব শব্দ লেখা যাবে না। তবে সংশ্লিষ্ট মামলায় রায়ের পর দোষী প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা যাবে।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালত বলেন, আজকের একটি শিশুকে ভবিষ্যৎ জীবনে যাতে কোনো কলঙ্ক বহন করতে না হয় সেটা বিবেচনা করেই এই নির্দেশনা দেওয়া হলো। কোনো মামলায় বিচারের ক্ষেত্রে শিশুর গোপনীয়তা রক্ষা করাই শিশু আইনের মূল উদ্দেশ্য। সামাজিকভাবে শিশুর মর্যাদা বজায় থাকে এবং সে বা তারা (সংশ্লিষ্ট শিশু) যাতে সংশোধন ও পুনর্বাসনের সুযোগ পায় সে জন্যই এই চেষ্টা।

সময় জার্নাল/আরইউ


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল