নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাঁচ দফা দাবি আদায়ে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত আটটি রাজনৈতিক দল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। গতকালের পল্টন সমাবেশের পর আজ এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা এই ঘোষণা দেয়। দলগুলোর মূল দাবি, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে ফেব্রুয়ারির আগেই গণভোটের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। তাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় যমুনার সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে।
আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে মগবাজার আল ফালাহ মিলনায়তনে যৌথ সংবাদ সন্মেলনে আট দলের পক্ষ থেকে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে এ হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি জানান, ১৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ফ্যাসিবাদী শক্তির নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে আট দলের নেতারা সর্বস্তরের জনশক্তিসহ দেশব্যাপী রাজপথে অবস্থান করবেন। পরেরদিন, ১৪ নভেম্বর শুক্রবার জুলাই জাতীয় স্মরণ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে দেশব্যাপী জেলা ও মহানগর মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১৬ নভেম্বর (রোববার) সকাল ১১টায় আন্দোলনরত আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে আলফালাহ মিলনায়তনে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর পূর্বে জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়া না হলে উক্ত সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় 'যমুনা'র সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, 'আন্দোলনরত দলগুলোর মধ্যে কোনো বিভেদ বা অনৈক্য নেই। কর্মসূচী বা নীতিগত পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ।'
তিনি আরও বলেন, 'বিএনপি অভিযোগ করছে আমরা নির্বাচন পেছানোর জন্য আন্দোলন করছি, যা একেবারেই অসত্য। আমরা ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চাই। এমনকি জুলাই সনদ বাস্তবায়িত হলে জানুয়ারিতে নির্বাচন করতেও আমরা রাজি।'
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের নাশকতা বা সহিংসতার সুযোগ দেওয়া হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, নেজামে ইসলাম পার্টির আমীর মাওলানা সারওয়ার কামাল আজিজী, খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবুল বাশার আজাদ, জাগপা'র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধানসহ আন্দোলনরত আট দলের শীর্ষ নেতারা।
আট দলের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো-
১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের ওপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা।
২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে/উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা।
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।
৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
এমআই