ইবতেশাম রহমান সায়নাভ, বেরোবি প্রতিনিধি:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ব্রাকসু) নির্বাচন স্থগিতের খবরে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) প্রশাসনের দীর্ঘসূত্রিতা, সময়ক্ষেপণ এবং স্বদিচ্ছার অভাবের এই অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ২৪ ডিসেম্বরের নির্ধারিত তারিখেই নির্বাচন সম্পন্নের দাবি করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১৮ নভেম্বর ব্রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ২৯ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়। পরবর্তীতে পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে ভোটের তারিখ এগিয়ে এনে ২৪ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হলেও খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকেই নাটকীয়তা শুরু হয়। এর শুরু প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আকস্মিক পদত্যাগ দিয়ে। এরপর আচরণবিধি প্রণয়ন, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং মনোনয়ন ফরম বিতরণের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস নির্বাচনী আমেজে মুখর হয়ে ওঠে।
কিন্তু মনোনয়নপত্র উত্তোলনের শেষ মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের ওপর ‘ব্রাকসু-বিরোধী একটি গোষ্ঠীর’ চাপ সৃষ্টি হয় বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। তারা দাবি করেন—চাপ, হুমকি এবং পদত্যাগের ইঙ্গিতের মাঝে কমিশন অযৌক্তিকভাবে ভোটার তালিকায় অসঙ্গতি দেখিয়ে নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন ও কমিশনের উদাসীনতা, দায়িত্বহীনতা ও সময়ক্ষেপণেই নির্বাচন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। তারা বলেন,
শিক্ষার্থীদের আবেগ নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে, আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।
এদিকে নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা পুনরায় আন্দোলনে নেমেছেন। দাবি তোলায় বাধা দিতে ব্রাকসু-বিরোধী গোষ্ঠীর প্রকাশ্য হুমকির কথাও তারা উল্লেখ করেন। তবে এসব সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেননি।
শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা পরিষ্কারভাবে দুটি দাবি জানান—
১. আজকের মধ্যেই তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল করতে হবে।
২. ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবে আমরা দেখিয়েছি অধিকার কীভাবে আদায় করতে হয়। এবারও প্রয়োজন হলে কঠোর আন্দোলনে নামতে আমরা প্রস্তুত।
তারা বলেন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্বের অধিকার নিয়ে যে কোনো টালবাহানা বা ষড়যন্ত্র আর কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন—২৪ ডিসেম্বরের নির্বাচন বাস্তবায়ন না হলে এবার আর তারা শান্ত থাকবে না।
একে