মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

৪ নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৫
৪ নারীর হাতে বেগম রোকেয়া পদক তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রতি বছরের মতো এবারও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক তুলে দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চার জনের হাতে তিনি রোকেয়া পদক তুলে দেন।

এবার যারা পদক পেলেন তারা হলেন— নারীশিক্ষা শ্রেণিতে (গবেষণা) রুভানা রাকিব, নারী অধিকার শ্রেণিতে (শ্রম অধিকার) কল্পনা আক্তার, মানবাধিকার শ্রেণিতে নাবিলা ইদ্রিস ও নারী জাগরণ শ্রেণিতে (ক্রীড়া) ঋতুপর্ণা চাকমা।
 
আজ ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক এবং নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

দিবসটি উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করছে। প্রতিবারের মতো এবারও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চার বিশিষ্ট নারীকে রোকেয়া পদক দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, খ্যাতিমান বাঙালি সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক এবং নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার অন্তর্গত পায়রাবন্দ ইউনিয়নে এক সম্ভ্রান্ত এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতা জহীরুদ্দীন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের এবং মাতা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরী। ১৯৩২ সালের একই দিনে মারা যান এই মহীয়সী। দিনটি প্রতি বছর বেগম রোকেয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়। সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরাতে তার অবদান আজও প্রাসঙ্গিক এবং দিকনির্দেশক।

বেগম রোকেয়ার পিতা জহীরুদ্দীন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের আরবি, উর্দু, ফারসি, বাংলা, হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। কিন্তু মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তিনি ছিলেন রক্ষণশীল। পাঁচ বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে কলকাতায় বসবাস করার সময় একজন মেম শিক্ষিকার কাছে তিনি কয়েক দিন লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। বড় ভাই-বোনদের সমর্থন ও সহায়তায় তিনি বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাই ভালোভাবে আয়ত্ত করেন।

১৮৯৮ সালে বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয় বিহারের ভাগলপুর নিবাসী উর্দুভাষী সৈয়দ সাখাওয়াৎ হোসেনের সঙ্গে। তিনি ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, তদুপরি সমাজসচেতন, কুসংস্কারমুক্ত এবং প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন। তার সাহচর্যে এসেই বেগম রোকেয়ার জ্ঞানচর্চার পরিধি বিস্তৃত হয়। উদার ও মুক্তমনের অধিকারী স্বামীর উৎসাহ ও সহযোগিতায় বেগম রোকেয়া দেশি-বিদেশি লেখকদের রচনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরিচিত হন এবং ক্রমশ ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। তার সাহিত্যচর্চার সূত্রপাতও ঘটে স্বামীর অনুপ্রেরণায়। তবে বেগম রোকেয়ার বিবাহিত জীবন বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। ১৯০৯ সালের ৩ মে সাখাওয়াৎ হোসেন মারা যান।

স্বামীর মৃত্যুর পর নিঃসঙ্গ বেগম রোকেয়া নারীশিক্ষা বিস্তার ও সমাজসেবায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯০৯ সালের ১ অক্টোবর স্বামীর প্রদত্ত অর্থে পাঁচজন ছাত্রী নিয়ে তিনি ভাগলপুরে সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল স্থাপন করেন। ১৯১১ সালের ১৬ মার্চ কলকাতার ১৩ নম্বর ওয়ালিউল্লাহ লেনের একটি বাড়িতে মাত্র আটজন ছাত্রী নিয়ে তিনি নবপর্যায়ে সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। রোকেয়ার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১৯১৭ সালে এই স্কুল মধ্য ইংরেজি গার্লস স্কুলে এবং ১৯৩১ সালে উচ্চ ইংরেজি গার্লস স্কুলে রূপান্তরিত হয়। সাহিত্যিক হিসেবে তৎকালীন যুগের প্রেক্ষাপটে বেগম রোকেয়া ছিলেন এক ব্যতিক্রমী প্রতিভা। তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯০৩ সালে নবনূর পত্রিকায়। 

উল্লেখযোগ্য রচনা : মতিচূর, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী, সুলতানার স্বপ্ন প্রভৃতি। এ ছাড়া আছে অসংখ্য প্রবন্ধ, ছোটগল্প, কবিতা, ব্যঙ্গাত্মক রচনা ও অনুবাদ। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর কলকাতায় তিনি মারা যান।

বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করেছে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৫ সময় জার্নাল