নিজস্ব প্রতিবেদক:
কেন্দুয়া উপজেলায় ক্রমবর্ধমান আত্মহত্যার ঘটনা একটি গভীর সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত এক বছরে উপজেলাটিতে প্রায় ৪০টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে, যা পরিবার, সমাজ এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি গুরুতর সতর্কবার্তা।
এই প্রেক্ষাপটে আত্মহত্যা প্রতিরোধ, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং সামাজিক সহমর্মিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রেরক ফাউন্ডেশন আয়োজন করে একটি সচেতনতামূলক সাইকেল র্যালি— “এওয়ারনেস র্যালী অ্যাগেইনেস্ট সুইসাইড – ঐক্যতান”।
র্যালিটি অনুষ্ঠিত হয় ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত। রুট (রাউন্ড ট্রিপ): কোটবাড়ী দুর্গ → পাইকুড়া বাজার → বৈরাটি → নীলাম্বরখিলা → কোটবাড়ী দুর্গ।
“ঐক্যতান” শব্দটি কেন্দুয়ার লোকসংগীত ঐতিহ্য থেকে অনুপ্রাণিত—যা জীবনের উত্থান-পতনকে সুরের বন্ধনে ধারণ করার প্রতীক। এই নামের মধ্য দিয়ে আয়োজকরা জীবনকে ভালোবাসা এবং সমাজের সম্মিলিত দায়িত্ববোধের বার্তা তুলে ধরেন।
প্রেরক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা শফিক আহমেদ ভুইয়া বলেন, “আত্মহত্যা কোনো ব্যক্তির ব্যর্থতার গল্প নয়। এটি আমাদের সমাজে সহমর্মিতা, পারিবারিক সমর্থন এবং তরুণদের নিরাপদ মানসিক পরিবেশ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ার প্রতিফলন। আমরা যদি সময়মতো একজন মানুষের পাশে দাঁড়াই, একটি কথাও অনেক সময় একটি জীবন বাঁচাতে পারে। ‘ঐক্যতান’ র্যালির মাধ্যমে আমরা সেই কথাই সমাজকে মনে করিয়ে দিতে চাই— "সুর ভাঙলে নয়,ধরি ঐক্যতান "জীবন কখনো একক সুরে চলে না। কখনো সুর ভাঙে, কখনো তাল হারায়। কিন্তু সুর ভাঙলেই জীবন থেমে যায় না,যদি আমরা একসাথে ঐক্যতান ধরতে পারি।
র্যালির মূল উদ্দেশ্য ছিল—
•আত্মহত্যা বিষয়ে ভুল ধারণা দূর করা
•মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নিরাপদ আলোচনা পরিবেশ তৈরি
•পরিবার ও সমাজে সহমর্মিতা ও সম্পর্ক-সচেতনতা বৃদ্ধি
•তরুণদের মানসিক সহায়তা চাওয়ার প্রবণতা উৎসাহিত করা
র্যালিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, স্বেচ্ছাসেবক, সামাজিক সংগঠন, সাইক্লিং গ্রুপ এবং সচেতন নাগরিকরা অংশগ্রহণ করেন।
প্রেরক ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচার, ক্যাম্পেইন, পরিকল্পনা এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। সংগঠনটির উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে “আলোর মুখোমুখি”, “প্রেরয়িতা” (উন্মুক্ত পাঠঘর), Ice Breaking Session, Thinking Out of The Box, Wrong Decision এবং Life is Beautiful—যেগুলো তরুণদের জীবনবোধ, আত্মবিশ্বাস ও কর্মোদ্যম গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখছে।
এমআই