বুধবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৫
সাইফ রসুল খান, খুবি প্রতিনিধি:
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) হাজারো শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ খেলাধুলা আজ সংকটের মুখে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৯টি ডিসিপ্লিন থাকলেও, শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র একটি খেলার মাঠ। এই সীমিত অবকাঠামো আর তার অব্যবস্থাপনার কারণে ক্রীড়ামুখী শিক্ষার্থীরা উৎসাহ হারাচ্ছেন, এবং খেলাধুলায় ভারসাম্যপূর্ণ অংশগ্রহণ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
ফুটবল এবং ক্রিকেট ক্লাবের একজন নিয়মিত খেলোয়াড়, চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা অভিজ্ঞতা সেই সংকটেরই প্রতিচ্ছবি। তিনি বলেন, "টুর্নামেন্ট চলাকালীন বা অন্য কোনো বিভাগের বড় খেলা থাকলে মাঠে অনুশীলন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মাঠ পাওয়াটা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।"একটি মাত্র মাঠের উপর ২৯টি বিভাগের চাপ এতটাই বেশি যে, কার্যকর রুটেশন বা সুষম সময়সূচি বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব। ফলস্বরূপ, কিছু বিভাগ এবং ক্লাব নিয়মিত সুযোগ পেলেও অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষার্থীরা খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া চর্চা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম স্বীকার করেন যে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা কঠিন। তিনি বলেন, "একটি মাঠ দিয়ে এতগুলো বিভাগের চাহিদা পূরণ করা কঠিন। আমরা সময় ভাগ করে রোটেশন রাখার চেষ্টা করি, তবে তা পর্যাপ্ত নয়। কিছু বিভাগ ও ক্লাবের খেলোয়াড়রাই স্বাভাবিকভাবে বেশি সুযোগ পান।"সংকট কেবল ছেলেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ছাত্রী শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলায় অংশগ্রহণের সুযোগ আরও বেশি সীমিত। তাদের নিজস্ব সময়সূচি বা আলাদা বরাদ্দ না থাকায় খেলার মাঠে তাদের উপস্থিতি নগণ্য।
এদিকে, একটি ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণাধীন থাকলেও, তা চালু না হওয়ায় মাঠসংকট আরও প্রকট হয়েছে। এই অবকাঠামোগত ঘাটতি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় নিরুৎসাহিত করছে না, সামগ্রিকভাবে তাদের স্বাভাবিক বিকাশকেও বাধাগ্রস্ত করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, শিক্ষার পূর্ণতার জন্য পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক বিকাশেও সমান গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
শিক্ষার্থীরা এখন জোর দাবি জানাচ্ছে দ্রুত ক্রীড়া অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং একটি ন্যায়সঙ্গত রোটেশনভিত্তিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হোক, যাতে প্রতিটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগে খেলাধুলায় অংশ নিয়ে তাদের প্রতিভা বিকশিত করতে পারে।
একে