ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক :
ক্যান্সার মৃত্যুহারে ফুসফুস ক্যান্সার নাম্বার, অর্থ্যাৎ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীতে যতোজন মৃত্যুবরণ করেন তার অধিকাংশই ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশও পুরুষদের মাঝে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত ও মৃত্যুহার সর্বাধিক। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইন্সটিটিউট এর মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের কিছু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে মহিলাদের মাঝেওবেই ক্যান্সারে আক্রান্তের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আজ ১লা অগাস্ট, বিশ্ব ফুসফুস ক্যান্সার দিবস। আসুন জেনে নেই ফুসফুস ক্যান্সারের নানা দিক
কেন হয় ফুসফুসের ক্যান্সারঃ
ধূমপানঃ প্রায় ৮০ ভাগ ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য দায়ী এই ধূমপান।
পরোক্ষ ধূমপানঃ ধূমপান না করেও ধূমপায়ীদের আশেপাশে থাকলে বৃদ্ধি পায় ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি
র্যাডন গ্যাসঃ এটি একটি প্রাকৃতিক গ্যাস, ঘরে বাইরে সর্বত্রই আসলে এই গ্যাস থাকে। তবে যারা ভূগর্ভস্থ স্থাপনা বা বেজমেন্টে দীর্ঘদিন কাজ করেন তাদের মাঝে এই ঝুঁকি বেশী দেখা যায়
এজব্যাস্টোস সহ অন্যান্য আরো ক্ষতিকর রাসায়নিক এজেন্টঃ মিল কল কারখানা, শিপিয়ার্ড, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি ইত্যাদিতে যারা কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশী
বায়ুদূষণঃ এক গবেষণায় দেখা যায়, শতকরা ৫% লাং ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর জন্য বায়ু দূষণ দায়ী
রেডিয়েশন থেরাপিঃ পূর্বে অন্য কোন ক্যান্সারের জন্য যদি আপনাকে ফুসফুসে বা তার আশেপাশে রেডিয়েশন নিতে হয় তবে পরবর্তীতে কিন্তু ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
ফ্যামিলি হিস্ট্রিঃ পরিবারের কারো ফুসফুস ক্যান্সার থাকলে সেই পরিবারের অনান্য সদস্যদের মাঝে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পায়
কি কি লক্ষণে বুঝবেন হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সারঃ
কাশি- যা সহজে সারছে না
কাশির সাথে রক্ত আসা
শ্বাসকষ্ট
বুকে বা পিঠে ব্যথা
গলার স্বর বসে যাওয়া
ঘন ঘন জ্বর
খাবারে অরুচি ও ওজন হ্রাস পাওয়া, ইত্যাদি
এছাড়া ক্যান্সার যদি ছড়িয়ে পড়ে তবে অংগভেদে লক্ষণ ভিন্ন হতে পারে; যেমনঃ ক্যান্সার যদি হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে তবে তীব্র ব্যথা বা ব্রেনে ছড়িয়ে পড়লে মাথাব্যথা, বমি, মাথা ঘুরানো ইত্যাদি লক্ষণ ও দেখা দিতে পারে।
ফুসফুস ক্যান্সার প্রতিরোধে আপনার যা করণীয়ঃ
ধূমপান করবেন না, যদি করে থাকেন আজই ত্যাগ করুন
পরিবারের সদস্য, বন্ধুদের মাঝে ধূমপায়ী থাকলে তাদের ধূমপান ত্যাগে উৎসাহিত করুন
কর্মক্ষেত্রে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে যথাযথ প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন
পরিবেশ দূষণ হ্রাসে সক্রিয় অংশ নিন
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন ও স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করুন।
লেখকঃ
ডা. মোহাম্মদ মাসুমুল হক
ক্যান্সার প্রতিরোধ চিকিৎসক
প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব
ক্যান্সার এওয়ারনেস ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ