এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের পশ্চিম চরবর্ণি গ্রামের ১৮ বছর ধরে মাটির গর্তে শেকলবন্দি থাকা মো. ওসমান শেখের (রবিউল) উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে পাবনা মানসিক হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে তাকে একটি মাইক্রোবাস যোগে নিজ বাড়ি থেকে পাবনায় পাঠানো হয়। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বাবা নুরুল মোল্যা ও তার এক ফুপু।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দের উদ্যোগে উপজেলা সমাজ সেবার অর্থায়নে রবিউলকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও বোয়ালমারী থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল আলম ব্যক্তি উদ্যোগে নগদ অর্থ ও একটি মাইক্রোবাস দিয়ে রবিউলকে পাবনা পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। এর আগে ইউএনও ওই বাড়িতে পরিদর্শনে গিয়ে নগদ ৫ হাজার টাকাসহ সরকারি খাদ্য সহায়তা করেন।
তাছাড়া গত সোমবার (২ আগষ্ট) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরের মাধ্যমে মানসিকভাবে অসুস্থ রবিউল ইসলামের বাবার হাতে আরো ৫ হাজার টাকা, চারটি টি-শার্ট ও চারটি ট্রাউজার্সও তুলে দেন ইউএনও।
রবিউলের বাবা নুরুল মোল্যা বলেন, আমাদের মতো গরীবের পাশে এভাবে কেউ দাড়াবে ভাবিনি। তিনি গনমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমার ছেলেকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না হলে হয়তো সারাজীবন ওই মাটির গর্তেই জীবন কাঁটতো। এ সময় নুরুল মোল্যা স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝোটন চন্দ বলেন, বিনামূল্যে রবিউলের সুচিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তির যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই তাকে পাঠানো হয়েছে। পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে তার সকল ধরণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছি। আশা করছি রবিউল ভাল হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরুল আলম জানান, রবিউলের খবরটি জানার পরপরেই পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামানের (বিপিএম সেবা) নির্দেশে তার বাড়ি ছুটে যাই এবং আমরা তাকে আর্থিক সহায়তা করি। প্রয়োজনে আরো সহায়তা করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মো. ওসমান ওরফে রবিউলের ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ডা. আবুল বাশার মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার একটি দাপ্তরিক চিঠি পেয়ে রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। যত্ন সহকারে ওই রোগীর চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
সময় জার্নাল/ইএইচ