মো. নিজাম উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে আসা লোকজনের ওপর দুই দফা হামলা করার অভিযোগ উঠেছে সদর উপজেলার দালালবাজার ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান সোহেল ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টা এবং বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দালাল বাজার ইউনিয়নের মুন্সিরহাট ১ নম্বর ওয়ার্ডের খন্দকারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এতে নারীসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন, দালালবাজার ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামের আজগর আলী, তার মা আমেনা বেগম, আব্বাস উদ্দিন, ফারুক হোসেন ও মো. জামাল আহত হয়েছেন। তাঁরা সদর হাসপাতাল ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানায়, ৭ আগস্ট ১ নম্বর ওয়ার্ডের খন্দকারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে টিকা দেওয়ার দিন ধার্য্য করা হলেও পরিবর্তে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) টিকা প্রদান করা হয়। ভোর থেকে কেন্দ্রে এসে টিকা গ্রহীতারা সারিবন্ধভাবে লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু কয়েকজন ব্যক্তি লাইনে না দাঁড়িয়েই টিকা নেওয়ার অভিযোগ উঠে। এতে দুই দফা লোকজন বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠলে চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সোহেল ও তাঁর অনুসারীরা গ্রাম-পুলিশদের হাত থেকে লাঠি নিয়ে এলোপাতাড়ি লোকজনকে পেটান। এতে অনেক নারী-পুরুষ টিকা না নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।
ভূক্তভোগী আজগর আলী জানান, তিনি মাকে নিয়ে ভোর সাড়ে ৬ টার দিকে টিকা কেন্দ্রে এসে লাইনে দাঁড়ান। ১০ টার দিকে সিরিয়ালকে কেন্দ্রে করে হঠাৎ সোহেল চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা এলোপাতাড়ি লাঠিপেটা শুরু করে। এসময় তার মা আঘাতপ্রাপ্ত হলে তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁকে একটি কক্ষে আটক রেখে মারধর করে মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায়। পরে টিকা না নিয়েই তারা বাড়ি ফেরেন। ঘটনাটি তিনি ৯৯৯’এ ফোন করে পুলিশকে জানান।
মারধরের শিকার আরেক ভূক্তভোগী মো. আব্বাছ উদ্দিন (৪৫) জানান, তিনি তাঁর আত্মীয়দের নিয়ে টিকা কেন্দ্রে যান। সাধারণ টিকা গ্রহীতারা লাইন দিয়ে দাঁড়ালেও বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কয়েকজন ব্যক্তি লাইন ছাড়া টিকাদান কেন্দ্র প্রবেশ করতে চাইলে সেখানে হট্রগোল সৃষ্টি হয়। এ সময় চেয়ারম্যান এসে চৌকিদারের হাত থাকা লাঠি নিয়ে তাকেসহ বেশ কয়েকজনকে লাঠিপেটা করেন। এতে তার ভাতিজিসহ কয়েকজন নারী পড়ে গিয়ে আহত হন।
টিকাগ্রহীতাদের মারধরের বিষয়টি অস্কীকার করে ইউপি চেয়ারম্যার কামরুজ্জামান সোহেল জানান, টিকাদান কেন্দ্রে সিরিয়াল ধরাকে কেন্দ্র করে হট্রগোল দেখা দিলে গ্রাম পুলিশদের সাথে নিয়ে তিনি পরিস্থিতি শান্ত করেন। কাউকে মারধর করা হয়নি। নির্বাচন কেন্দ্রীক এলাকাতে তার বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা এ অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি জানান, এ কেন্দ্রে মাত্র দুইশ’ ডোজ টিকা এসেছে। কিন্তু কয়েক হাজার লোক টিকা নেওয়ার জন্য এসেছেন। ফলে পরিস্থিতি সামাল দিতে একটু হিমশিম খেতে হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি।
সময় জার্নাল/এমআই